নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের যে সব রাজনীতিবিদ কংগ্রেস(INC) ছেড়ে নিজেদের পৃথক রাজনৈতিক দল তৈরি করেছেন তাঁদের মধ্যে সব থেকে বেশি সফল হিসাবে রয়েছেন তৃণমূল(TMC) সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। কংগ্রেস থেকে বেড়িয়ে এসে তিনি একা হাতে গড়ে তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস। সেই দলের জন্মের ১৩ বছরের মধ্যেই তিনি বাংলা থেকে ৩৪ বছরের অপশাসন মুছে দিয়ে পরিবর্তনের জয়গান গেয়েছেন। নিজে হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাও এক আধ দফার নয়, টানা ৩ বারের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। একইসঙ্গে আগামী দিনের দেশনেত্রী। সেই তিনিই এদিন বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। জানিয়েছেন, ‘আমি একদিন কংগ্রেস করতাম, কংগ্রেস থেকে তাড়িয়ে দিল আমাকে।’ তাঁর এই দাবি শুনে এদিন অনেকেই চমকে উঠেছেন। কেননা এতদিন অনেকেই জানতো তাঁকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি না করার জন্যই তিনি নিজে কংগ্রেস থেকে বেড়িয়ে এসে তৃণমূলের জন্ম দিয়েছেন। এদিন কিন্তু ভিন্ন কথাই শোনা গেল মমতার কন্ঠে।
এদিন মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুরে ছিল মুখ্যমন্ত্রীর সভা। সেই সভার আগে এদিন তিনি মালদা জেলার সদর শহর ইংরেজবাজারে একটি পদযাত্রা ও সভা করেন। সেই সভা সেরে বহরমপুর আসার পথে তিনি শুনতে পান রাহুল গান্ধির গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনার জেরে বহরমপুরের সভা থেকে সরব হন তিনি। বলেন, ‘হেলিকপ্টারে আসতে আসতে আমি মেসেজ পেলাম। কংগ্রেসের এক নেতা নাকি… রাহুলের(Rahul Gandhi) নামটা বলেই দিই। ও আমার চেয়ে বয়সে ছোট। রাহুলের গাড়িতে নাকি কেউ ঢিল মেরেছে। ওর গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। আমি এ সব পছন্দ করি না। তবে পরে শুনলাম, ওটা কাটিহারের ঘটনা। ওরা গাড়ির কাচ ভাঙা অবস্থায় বাংলায় ঢুকেছে। বাংলার কেউ জড়িত নন। বিহারে সবে নীতীশ কুমারের দল বিজেপির দিকে ঝুঁকছে। ওরা এক হচ্ছে। ওদের রাগ আছে। তাই এ সব ঘটতে পারে। যে কোনও পার্টি মিটিং মিছিল করতেই পারে, আমি বলব শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করতে পারে। কিন্তু ২ তারিখ থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরীক্ষা বিধি মেনে মাইক বাজিয়ে কোনও প্রোগ্রাম হবে না, আমার মিটিংও মাইক বেঁধে হচ্ছে না, বক্স লাগিয়ে হচ্ছে যাতে আওয়াজে সমস্যা না হয়। পরীক্ষা চলাকালীন কাউকে ডিস্টার্ব করব না, তাই পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার পোগ্রাম বাতিল করলাম।’
এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া ভালো ছিল, সিপিএম সম্পর্ক নষ্ট করেছে। সিপিএম(CPIM) এখন ওদের নেতা হয়েছে। সিপিএমের কথাতেই ওরা এখন ওঠবোস করছে। আমি দুটি সিট দিতে চাইছিলাম কিন্তু তাতে হবে না, তাহলে কটা চাই। ৪২ এ ৪২? একটাও সিট ছাড়বো না। আগে তোমরা সিপিএমকে ছাড়ো। আমি মালদার দুটো সিট ছেড়ে দেব। নাহলে তোমরা সিপিমের সঙ্গেই লড়ো। ওরা বিজেপির(BJP) দালাল। আমার ক্ষমতা আছে তাই একা লড়ব, বিজেপিকে হারাব। আমি মরতে রাজি তবে মাথা নত করব না, প্রয়োজন হলে আঁচল পেতে মায়েদের কাছে গিয়ে দাঁড়াব। নির্বাচনে জেতার পরই সব ডিমের দোকান বন্ধ বিজেপির রাজ্যে। বলছে মাছের দোকান বন্ধ, ডিমের দোকান, মাংসের দোকান বন্ধ, এটা কেমন কথা। কেউ যদি ভেজ খায় ভালো, অনেক ভালো ভেজ খাবার আছে। বিজেপি জল প্রকল্প নিয়ে মিথ্যে প্রচার করছে। বাংলার টাকা আটকে রাখা হয়েছে। ওবিসিদের ভাতা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’