নিজস্ব প্রতিনিধি: দেড় বছর আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে উত্তর শহরতলির বাগুইআটি(Baguihati) থানা এলাকায় উঠেছিল গণধর্ষণের অভিযোগ। এক যুবতীকে গভীর রাতে বাড়ি থেকে ডকে এনে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল দুই যুবকের বিরুদ্ধে। সেই স্মৃতি এখনও অনেকটাই টাটকা এলাকাবাসীর মনে। এবার সেই বাগুইআটি থানা এলাকারই একটি বেসরকারি হোটেলে এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠল তাঁরই দুই সহকর্মীর বিরুদ্ধে। আরও বিস্ফোরক অভিযোগ, ওই দুই সহকর্মীর মধ্যে একজনকার স্ত্রী আবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ওই মহিলাকে গণধর্ষণ করার মদত দেন। মূল ঘটনাটি ঘটে গত ১১ জুন। তবে নির্যাতিতা বাগুইআটি থানায় অভিযোগ জানান বুধবার সকালে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গতকাল রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করে ওই মহিলা সহ ৩জনকে। এদিনই তাদের আদালতে তোলা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
নির্যাতিতার অভিযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায়(IT Sector) কাজের সূত্রেই অভিযুক্তদের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। যে সংস্থাতে তাঁরা কাজ করতেন সেই সংস্থারই একটি অনুষ্ঠানের জন্য বাগুইআটিতে একটি হোটেল(Hotel) ভাড়া নেওয়া হয়। সেখানেই গত ১১ জুন অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়েই নির্যাতিতার পানীয়তে(Drink) কোনও নেশার ওষুধ বা মাদক(Drug) মিশিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই পানীয় আবার তাঁর হাতে তুলে দিয়ে তা পান করতে জোরাজুরি করেছিলেন ঘটনার অন্যতম মূল অভিযুক্ত ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী ইন্দ্রানী দাস। সেই পানীয় খেয়েই চেতনা হারান ওই নির্যাতিতা। তখন ভাস্কর ও ওই তরুণীর অপর এক সহকর্মী চিরঞ্জীব সূত্রধর তাঁকে ওই হোটেলের একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে বিবস্ত্র করে বারংবার ধর্ষণ করে। নির্যাততাকে গণধর্ষণ করার ঘটনা আবার ভিডিও রেকর্ড করে রাখেন ভাস্করের স্ত্রী। তরুণী সেদিন ভোরের দিকে কোনওরকমে বাড়ি ফেরেন। ভিন রাজ্যের বাসিন্দা হওয়ার জেরে নির্যাতিতা ভাবতে পারেননি ঠিক কী করবেন। শেষে ফোন করে গোটা ঘটনা জানান পরিবারকে। তার জেরেই তাঁর বাড়ির সদস্যরা কলকাতায় আসেন ও গতকাল থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করান। এদিন তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা হওয়ার কথা রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, থানায় অভিযোগ দায়েরভ হওয়ার খবর পেয়েই গা ঢাকা দেয় ৩ অভিযুক্ত। যদিও পুলিশ তাদের মোবাইল টাওয়ার দেখে বুধবার রাতের মধ্যেই কলকাতার কসবা থেকে ভাস্করকে, পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি থেকে চিরঞ্জীবকে এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার টিটাগড় থেকে ইন্দ্রানীকে গ্রেফতার করে। এদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ডি-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।