নিজস্ব প্রতিনিধি: হে বঙ্গ তোমার ভাণ্ডারে দেখি কত বিবিধ রতন, কেউ বা কয়লাচোর তো কেউ নারদার চোর। কেউ পাচার করেন গরু, কেউ বা নারী। কেউ গ্রেফতারির হাত থেকে বাঁচতে দল বদল করেন তো কেউ ১০-১২জনের সঙ্গে বিছানায় শুয়ে লাখ লাখ টাকা নিয়ে গা ঢাকা দিয়ে দেন। এ বঙ্গের তুলনা মেলা ভার। শুনুন তাহলে একজনের কিসসা। সে নিজেকে পরিচয় দিত সেনাকর্মী বলে। খুব কম করেও সে জন ১২ মেয়েকে নিজের প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছিল। তার মধ্যে ৫জনকে সে বাড়ি থেকে ভাগিয়ে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফুলশয্যাও করে ফেলেছে। আর জন ৬য়ের সঙ্গে বিয়ে ছাড়াই ফুলশয্যা। শুধু তাই নয়, এদের কাছ থেকে সে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ঝেঁপেও দিয়েছে। শেষে সেই গুণধর ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে(Arrest)। নিজে মুখেই সে স্বীকার করেছে, ‘আমার এক ডজন বউ রয়েছে’। এহেন গুণধরের নাম অমিত মিত্র। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ঝড়খালিতে। তবে সে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত সোনারপুরে(Sonarpur)। সেখানেই সে ধরা পড়েছে পুলিশের হাতে।
জানা গিয়েছে, অমিত নামের ওই যুবক আদতেই সেনাবাহিনীর জওয়ান(Fake Jawan) নয়। কিন্তু সেই পরিচয় দিয়েই সে প্রায় এক ডজন মহিলাকে তার প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে বিছানায় নিয়ে গিয়েছে। ৫জনকে সে বিয়েও করে পালিয়ে গিয়ে। আর ৬টি মেয়েকে সে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার সহবাস করেছে। সূত্রের দাবি এই সব মহিলার মধ্যে ৪জন ইতিমধ্যেই অন্তসত্ত্বা। বোঝো ঠ্যালা। ঘটনা হচ্ছে, বিভিন্ন এলাকায় মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে নিজের থাকার জায়গা বদল করত অমিত। শুধু তাই নয় সে মূলত মহিলাদেরই টার্গেট করত। তাঁদের সরকারি প্রকল্প থেকে মোটা টাকা অনুদানের লোভ দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত সে। আর সেই সূত্রেই জমে উঠত আলাপ। তারপর ঠোঁটে ঠোঁট, বিছানায় ঝড়। এখন সামনে আসছে যে অমিত যে সব মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিল তাদের কারোর কাছ থেকে গড়ে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে আদায় করেছিল। সব মিলিয়ে মোট ২১জন মহিলার কাছ থেকে সে ৩৬ লক্ষ টাকা আদায় করে। এদের সবাইকে সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ‘ডার্লিং ৭০ হাজার দাও, ১০ লাখ নাও’। কিন্তু ১০ লাখ তো দূরের কথা এরা কেউ ১০ পয়সাও ফেরত পায়নি।
প্রতারিত ওই সব মহিলাদের একজন জানিয়েছে, ‘অমিত বলেছিল ও বিএসএফে চাকরি করে। আমাকে বলেছিল, বিএসএফে নাকি একটা ফান্ড আছে যেখানে ৫০ হাজার টাকা দিলে, ১০ লাখ টাকা ফেরত পাবে৷ সেই বিশ্বাসেই দিয়েছিলাম। ও বলেছিল আরও যদি কোনও মহিলা থাকে, তাঁদেরও বলতে৷ আমি সেইমতো কয়েকজন মহিলাকে জোগাড়ও করি৷ এরপর টাকা সহ ওকে আধার, ভোটার এবং প্যান কার্ড সহ দু’ কপি করে ছবি দিই৷ তারপরও ফাইল স্থানান্তর, ফর্ম ফিলাপের নামেও পরে আরও কিছু টাকা নেয়৷ এক বছর হয়ে যাওয়ার পর ওর ফোন সুইচড অফ আসছিল৷ গতকাল ওকে রাসবিহারীতে ধরা হয়৷ সেখান থেকে বালিগঞ্জ স্টেশনে এনে সোনারপুর থানায় নিয়ে গিয়ে লিখিত ডায়েরি করি৷ এখন আমি ৩ মাসের অন্তসত্ত্বা। আমি ওর জন্য বাড়ি থেকে বেড়িয়ে বিয়ে করেছিলাম। এখন আমি কী করব? কোথায় যাব। লোককে মুখও দেখাতে পারব না।’