নিজস্ব প্রতিনিধি: আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায়(Madhyamaik Exam) কেন্দ্রগুলোর যাবতীয় দায়-দায়িত্ব এ বার Officer Incharge-দের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ(WBBSE)। পরীক্ষার সময় যে কোনও অশান্তি বা গোলমাল হলে, তার জন্য Officer Incharge -রাই দায়বদ্ধ থাকবেন। নতুন এই নির্দেশে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের মধ্যেও। পর্ষদের নির্দেশিকা অনুযায়ী, এ বার পরীক্ষা সংক্রান্ত যে কোনও খুঁটিনাটি কাজ তাঁদের করতে হবে। এমনকী, পরীক্ষা শুরুর আগে মেন ও সাব ভেন্যুতে পরীক্ষায় বসা সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলোর পর্ষদের স্বীকৃতি সংক্রান্ত নথি যাচাই করে বিশদ রিপোর্টও দেবেন তিনি। পর্ষদের নির্দেশে বলা হয়েছে, পরীক্ষা চলাকালীন কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে, সংশ্লিষ্ট Officer Incharge-দের Additional Venue Supervisor বা AVS’র মাধ্যমে পর্ষদকে তৎক্ষণাৎ বিষয়টি জানাতে হবে। সেই সময়ে Officer Incharge-রা কোনও ঘটনার বিষয়ে মুখে কুলুপ আঁটলে, এবং পরে তা জানা গেলে বিশদ তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
পর্ষদের এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই এখন ক্ষোভ ছড়িয়েছে। রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সাধারণত Officer Incharge’র দায়িত্ব পালনের কথা বিদ্যালয় পরিদর্শক বা DI’র অধীনস্থ Assistant Inspector বা AI ও Sub-Inspector বা SI-দের। কিন্তু DI অফিসেও পর্যাপ্ত আধিকারিক না থাকায় পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোয় Officer Incharge’র দায়িত্ব পড়ে BDO অফিসের আধিকারিকদের ওপরেই। সেক্ষেত্রে Fisheries and Industrial Development Officers, Co-operative Inspectors, Mass Education and Social Education Officers-রা সেই দায়িত্ব পালন করেন। এখন এদের বক্তব্য, ‘আমাদের কী এ বার লাঠি হাতে পাহারাও দিতে হবে? Main Venue Officer হিসাবে থানা বা ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করা, সেগুলো শর্টিং করে মূল ভেন্যুর পাশাপাশি তার আওতায় থাকা সমস্ত সাব ভেন্যুতে পৌঁছে দেওয়া, মেন ভেন্যু এবং সাব ভেন্যুতেও রাউন্ড দেওয়া, পরীক্ষা শেষে সমস্ত কেন্দ্র থেকে উত্তরপত্র সংগ্রহের পরে প্যাকেজিং করে সেই পার্সেল আবার পর্ষদে পাঠানো, এই যাবতীয় কাজ অফিসার ইনচার্জদের করতে হয়। এরপরেও আর কী কাজের দায়িত্ব পর্ষদ আমাদের ওপর ন্যস্ত করতে চায়?’
তাঁদের আরও বক্তব্য, ‘পরীক্ষা পর্ব মিটলে মেন ও সাব ভেন্যুতে পরীক্ষা চলাকালীন কী কী অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা হয়েছে, সে সম্পর্কে বিশদ তথ্য দিয়েই সরকারি স্তরে গোপন রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। কিন্তু পরীক্ষা চলাকালীন নিয়মিত এই রিপোর্ট দিলে ও সেই মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করলে কয়েকটি জেলার সংবেদনশীল কেন্দ্রগুলোয় সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করাটাই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। শুধু তাই নয়। ওই সব কেন্দ্রে পর্যাপ্ত সশস্ত্র পুলিশও থাকে না। নামকেওয়াস্তে নিরাপত্তা রক্ষীরা থাকেন। ফলে আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে?’ যদিও পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়(Ramanuj Gangopadhay) জানিয়েছেন, ‘২৯ নভেম্বর থেকে আমি জেলা সফরে যাচ্ছি। জেলা প্রশাসন, আধিকারিক এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওপর আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা আছে। এঁরা সকলেই অভিজ্ঞ ও মাধ্যমিক পরীক্ষার বিষয়ে অবহিত। পরীক্ষার সময় যাতে কোনও ঘটনা না ঘটে, সে ব্যাপারে সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এতদিন অফিসার ইনচার্জদের কোনও দায়বদ্ধতা ছিল না। এবার দায়বদ্ধতা তাঁদের নিতে হবে।’