নিজস্ব প্রতিনিধি: দাবি করা হচ্ছিল লক্ষ কন্ঠেই হবে গীতাপাঠ। কিন্তু লক্ষ কন্ঠের জমায়েত যে হয়নি সেটা ফাঁস হয়ে গেল একাধিক সংবাদমাধ্যমের ড্রোন শটের(Drone Shot) মাধ্যমে। সেই সব ড্রোন শটের ছবিই এখন ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়(Social Media)। একই সঙ্গে সামনে চলে এসেছে বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) সংগঠনের বেহাল দশার ছবি। বঙ্গ বিজেপির দুই মাথা সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar) এবং শুভেন্দু অধিকারীর(Suvendu Adhikari) ডাকে যে বঙ্গ বিজেপির নেতা থেকে কর্মী মায় সমর্থকেরাও সাড়া দিচ্ছেন না, সেটা এদিনের ব্রিগেডের সভার(Geeta Path in Brigade Parade Ground) বেহাল দশার ছবি বলে দিচ্ছে। লক্ষ মানুষের জমায়েতের জন্য ব্রিগেডের যে অংশ সাজিয়ে রাখা হয়েছিল সেই সব এলাকার অর্ধেকই খালি রয়ে গিয়েছিল এদিন। কলকাতা পুলিশের তরফে দাবি, ৩০ হাজারের বেশি লোক হয়নি। কিছু কিছু মহলের দাবি, ৫০ হাজারের বেশি লোক হয়নি। বিজেপির নেতাদের দাবি, ৬০ হাজারের আশেপাশে ভিড় হয়েছিল। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ(Kunal Ghosh) ট্যুইট করে ব্রিগেডের সভার ছবি নিয়ে খোঁচা দিলেন, ‘গীতা পাঠের সময়ে ব্রিগেড। ভাই, ব্রিগেড ভাড়া না করে শ্রদ্ধানন্দ পার্কে করলেই পারতেন। এ তো গীতার অপমান।’
গীতার অপমান না হোক, বঙ্গ বিজেপির বেহাল দশা যে আবারও প্রকট হয়ে গেল ফ্লপ ব্রিগেডের জেরে সেটা আর অস্বীকার করার উপায় রইল না। কিন্তু কেন জমল না ব্রিগেডের সভা। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, এর পিছনে অনেক কারণ আছে। প্রথমত, দিন নির্বাচনে ভুল। ২৪ ডিসেম্বর এবার রবিবার পড়েছে। সেই অর্থে বাংলায় এখন বড়দিনের উৎসব মধ্যগগণে। লোকে এখন সপরিবারে সবান্ধবে ছুটি কাটাচ্ছে, ঘুরতে যাচ্ছে, পিকনিকে যাচ্ছে। তখন কে গীতাপাঠ নিয়ে মাথা ঘামাবে? দ্বিতীয়ত, TET পরীক্ষার দিনে এই সভার আয়োজন আরও ভুল ছিল। তরুণ প্রজন্মের হাজিরা সেভাবে সভায় ছিলই না। কার্যত গোটা সভাটি বিজেপি গাজোয়ারির সভা হিসাবে রাজ্যের জনমানসে পরিচিতি পেয়েছে। মানুষ সেখান থেকেও মুখ ঘুরিয়ে থেকেছে। তৃতীয়ত, ব্রিটিশ শাসনে থাকা বাঙালি বড়দিনকে তাঁদের নিজেদের উৎসব বলেই মেনে নিয়েছে। সেই বড়দিনের উৎসবকে একরকমের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে গেরুয়া শিবির যে উগ্র হিন্দুত্বের পথে নেমেছে তা বাঙালি গ্রহণ করেনি, কোনওদিন করবেও না। এটা সভার আয়োজকরা কিছুতেই বুঝতে চাননি। চতুর্থত, বাংলার মানুষ বিজেপির ওপর ফুঁসছে নানা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার জন্য। তাঁদের এখন ধর্মের পাঠ দিতে গেলে তাঁরা তা হজম করবেন কেন? পেটে খিদে নিয়ে কী তাঁরা গীতা পাঠ করবেন!