নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রয়াত কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলর তৃণমূল নেতা রামপেয়ারি রাম। বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। দীর্ঘ দিন অসুস্থ ছিলেন তিনি। রবিবার সকালে আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস করেন তিনি।
জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল রামপেয়ারি রামকে। রবিবার বেলা ১১টা নাগাদ মৃত্যু হয় বর্ষীয়ান এই নেতার। শোকের ছায়া কলকাতা বন্দর এলাকায়। কলকাতা পুরসভার ৭৯ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন তিনি। চলতি সময়কাল ধরে একটানা ১১ বারের কাউন্সিলার নির্বাচিত হন রাম পেয়ারি রাম। আগে ছিলেন কংগ্রেসে। পরে তৃণমূলে যোগ দেন। তিনি নিজেও এ নিয়ে মজা করে প্রায়ই বলতেন, ‘‘আমার নামের আগে রাম পিছে রাম। আমার মতো ধর্মনিরপেক্ষ ব্যক্তি হতে পারে না!’’
রামপেয়ারির সাত বার বিধায়ক হয়েছেন। কলকাতা পুরসভার ১০ বারের কাউন্সিলর ছিলেন। ১৯৭১ সালে কলকাতার কবিতীর্থে আসনে প্রথম বার কংগ্রেসের বিধায়ক হন তিনি। ১৯৮৭ সালে আবার বিধায়ক নির্বাচিত হন বন্দর এলাকার ওই নেতা। তার পর ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত পর পর পাঁচ বার বিধায়ক হন রামপেয়ারি। পরে বিলুপ্ত হয় কবিতীর্থ আসনটি।
এরপর ২০১১ সালে রাম পেয়ারি রাম ও তাঁর স্ত্রী হেমা রাম যোগ দেন তৃণমূলে। তৃণমূলের টিকিটেও কাউন্সিলর হন তিনি।দীর্ঘদিনের এই রাজনীতিবিদের অবশেষে জীবনাবসান হল আজ। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া রাজনৈতিকমহলে ও বন্দর এলাকায়।
শুধু বিধায়ক নন কাউন্সিলর হিসাবে তাঁর পরিচিত ছিল। ১৯৮০ সালে প্রথম বন্দর এলাকার ৮০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হন তিনি। পরে স্ত্রী হেমা রামকে ওই ওয়ার্ডটি ছেড়ে দেন। পাশের ওয়ার্ড ৭৯ নম্বরে লড়াই করেন তিনি। ওই ওয়ার্ড থেকে এত দিন কাউন্সিলর রয়েছেন। কলকাতার পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন রাম। শোভনই তাঁকে প্রথম বার পুরসভার মেয়র পারিষদ হিসাবে দায়িত্ব দেন। পরে ফিরহাদ মেয়র হয়ে বর্ষীয়ান নেতাকে ওই দায়িত্বে রাখেন। লোকসভা ভোটেও লড়াই করেছেন তৃণমূলের এই নেতা। ১৯৯৮ সালে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হন তিনি। সেখান থেকে তিনি জয়ী হননি।
মৃত্যুর খবর পেয়ে রবিবার সকালে হাসপাতালে যান মেয়র ফিরহাদ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বার্ধক্যজনিত নানা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এই নেতা। বেলা ১১টা ৭ মিনিট নাগাদ তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। গতবছর কলকাতা খিদিরপুর এলাকায় গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তৃণমূল কাউন্সিলরের রাম পেয়ারে রামের ছেলের রামকিঙ্কর রামের। খিদিরপুরের বাবুবাজারে কাঁটাপুকুর রোডে সার বোঝাই একটি লরি উল্টে যায়, তৃণমূল কাউন্সিলর রাম পেয়ারে রামের ছেলের গাড়ির ওপর। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, তার পর থেকেই তিনি ভেঙে পড়েন। একাধিক বার অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত ৬ নভেম্বর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সোমবার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে তৃণমূল নেতার। ওই দিন তাঁর মরদেহ প্রথমে বিধানসভায় আনা হবে। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে ক্যাওড়াতলা মহাশ্মশানে।