নিজস্ব প্রতিনিধি: কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee)। বাংলার(Bengal) সব রেশন দোকানে(Ration Shop) বাধ্যতামূলক ভাবে বসাতে হবে রেশনের ওজন মাপার যন্ত্র। সেই নির্দেশ যাতে প্রতিটি রেশন ডিলার(Ration Dealers) মানতে বাধ্য থাকেন তার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্যের খাদ্য দফতরের(West Bengal State Food Department) তরফে প্রতিটি রেশন ডিলারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সেই যন্ত্র। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, রেশনের খাদ্যসামগ্রী যাতে চুরি না হয়, কোনও গ্রাহককে তাঁর প্রাপ্যের থেকে রেশন কম না দেওয়া হয় তা নিশ্চিত করতেই মুখ্যমন্ত্রী এই কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা সাম্প্রতিক কালে রাজ্যে যে রেশন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন রেশন ডিলাররা তার অন্যতম কারণ ছিল এই রেশনের সামগ্রী মাপার যন্ত্রের ব্যবহার। তাঁরা সেই যন্ত্র ব্যবহার করতে চাইছিলেন না। আর তার জেরেই এবার সরাসরি রাজ্যের সব রেশন দোকানে ওই ওজন মাপার যন্ত্রের ব্যবহার বাধ্যতামূলক ভাবে করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যারা এই নির্দেশ মানবেন না তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে খাদ্য দফতর।
E-Pos’র মাধ্যমে গ্রাহকের Aadhar Card’র Biometric বায়োমেট্রিক যাচাই করে রাজ্যে খাদ্যবণ্টন প্রক্রিয়া চালু হয়েছে অনেক আগেই। Eye Scanner যন্ত্রের ব্যবহার চালু হওয়ার পর প্রায় ১০০ শতাংশ ক্ষেত্রে Biometric যাচাইয়ের মাধ্যমেই রেশন দেওয়া হচ্ছে। তারপরেও অবশ্য প্রশ্ন থেকে যাচ্ছিল যে রেশনের গ্রাহকেরা তাঁদের প্রাপ্যের সমান খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন কিনা তা নিয়ে। কেননা রাজ্যের খাদ্য দফতরের কাছে বিস্তর অভিযোগ এসেছিল যে রেশন দোকানে চাল, ডাল, গম, আটা, চিনি দেওয়ার ক্ষেত্রে বিস্তর গরমিল ঘটানো হচ্ছে ওজনের ক্ষেত্রে। গ্রাহকেরা তা নিয়ে প্রতিবাদ জানালেও তাঁদের সরাসরি জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে কম পরিমাণে জিনিস দিতে নাকি রাজ্য সরকার নির্দেশ দিয়েছে। অর্থাৎ যার ৫০০ গ্রাম পাওয়ার কথা তাঁকে ৪০০ গ্রামের জিনিস দিয়ে বলা হচ্ছে রাজ্য সরকার ১০০ গ্রাম কম জিনিস দিতে বলেছে। এই ঘটনা রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ করছিল। আর তাই বাধ্যতামূলক ভাবে এই চুরি ঠেকাতে পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গ্রাহকরা যাতে তাঁদের বরাদ্দ অনুযায়ী খাদ্যসামগ্রী পান, সেটা নিশ্চিত করতেই মুখ্যমন্ত্রী নতুন ইলেকট্রনিক ওজনযন্ত্র চালু ও তা ব্যবহার করার কড়া নির্দেশ জারি করতে বলেন খাদ্য দফতরকে। এই যন্ত্রটি Blue Tooth’র মাধ্যমে E-Pos যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত থাকে। নতুন ব্যবস্থায়, ওজন করার যন্ত্রে বরাদ্দ অনুযায়ী খাদ্য দেওয়ার পর স্লিপ বেরনোর সঙ্গে সঙ্গেই খাদ্য দফতরে সার্ভারে তা রেকর্ড হয়ে হবে। ফলে সেখান থেকেই জানা যাবে গ্রাহক তাঁর প্রাপ্যের সমান ওজনের খাদ্য সামগ্রী পাচ্ছেন নাকি কম বা বেশি পাচ্ছেন। আর এই ব্যবস্থা নিয়েই তীব্র আপত্তি রাজ্যের রেশন ডিলারদের একাংশের। কিন্তু তাঁরা চুরির ঘটনা মেনে না নিয়ে বলছেন এই ব্যবস্থায় নাকি রেশন দিতে অনেক দেরী হচ্ছে। যদিও খাদ্য দফতরের তরফে রাজ্যের সব রেশন ডিলারকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নয়া ব্যবস্থা সবাইকেই মানতে হবে। তবে যে সব রেশন ডিলাররা আপত্তি করছেন এই ব্যবস্থা লাগু নিয়ে তাঁরা কেউই জেলা শহর ও গ্রামাঞ্চলে সংশোধিত এলাকার ডিলার নন। যত সমস্যা রাজ্যের বড় শহর এলাকার ডিলারদের।