নিজস্ব প্রতিনিধি: মহালয়ার পূণ্য়লগ্নে প্রতিবছরের মতো এবারও প্রকাশিত হল তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলার উৎসব সংখ্যা। এই শারদ সংখ্যার প্রথম প্রবন্ধটিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা। প্রবন্ধটির শিরোনাম ‘দিল্লির ডাক’। এই লেখার ছত্রে ছত্রে তৃণমূল নেত্রী বুঝিয়েছেন, বিজেপিকে উৎখাত করতে গোটা দেশে তৃণমূলই একমাত্র লড়াইয়ের মুখ হয়ে উঠেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখায় উঠে এসেছে সিপিএমের সঙ্গে তাঁর লড়াইয়ের কথাও। তিনি লিখেছেন, একটা সময় বাংলার প্রকৃত স্বাধীনতা ও মুক্তির যুদ্ধে সিপিএমের বিরুদ্ধে আসল মুখ হয়ে উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সিপিএম আজ ক্ষীণশক্তি, প্রাসঙ্গিকতা থেকে বহুদূরে। আজ উন্নয়ন করে মানুষের ভালোবাসা পাচ্ছে তৃণমূল। একইসঙ্গে এই ইস্যুতে আবার তীব্র আক্রমণ করেছেন কংগ্রেসকেও। তিনি বুঝিয়েছেন, দিল্লির মসনদ থেকে বিজেপিকে হঠানোই এখন বিরোধীদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।
আর এই লক্ষ্যে যে একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসই প্রধান মুখ হয়ে উঠেছে সেটাও ব্যাখ্যা করছেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর ভাষায়, বাস্তব হল সাম্প্রতিক অতীতে কংগ্রেস দিল্লির দরবারে বিজেপিকে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়েছে। গত দুটি লোকসভা নির্বাচন তার বড় প্রমাণ। দিল্লিতে যদি লড়াই না থাকে, তাহলে মানুষের মনোবল কমে যায় এবং লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যগুলিতেও বিজেপি কিছু বাড়তি ভোট পেয়ে যায়। সেটা এবার কিছুতেই হতে দেওয়া যাবে না।
আবার তিনি লিখেছেন, কেন্দ্রে বিকল্প জোটের নেতৃত্ব নিয়ে তৃণমূল চিন্তিত নয়। তবে বাস্তবটা কংগ্রেসকে অনুভব করতে হবে। অন্যথায় বিকল্প শক্তির গঠনে ফাঁক থেকে যাবে। তাই তৃণমূল নেত্রী লিখেছেন, বিজেপি বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের উচিত একজোট হওয়া। নিজেদের অঙ্কে নয়, দেশের স্বার্থেই একজোট হতে হবে। বিকল্প মঞ্চকে শক্তিশালী করতে হবে। সেই মঞ্চ হবে নির্দিষ্ট নীতি ও কর্মসূচির ভিত্তিতে। তিনি এও লিখেছেন, আমরা কখনই কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে এই বিকল্প মঞ্চ তৈরির কথা বলছি না, ভাবছিও না।
মমতার প্রবন্ধের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে, বাংলায় সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই এবং রেলমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর কাজ ও নীতির প্রসঙ্গ। তবে রাজনৈতিক মহলের নজর টেনেছে একটি অংশ। সেখানে তিনি লিখেছেন, বাংলার এবারের নির্বাচনে গোটা দেশ দেখেছে বিজেপির সর্বশক্তিকে কীভাবে তৃণমূল হারিয়ে দিয়েছে। যাঁরা দেশ চালাচ্ছেন (আসলে ডোবাচ্ছেন) তাঁরা সকলেই তো ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করলেন, কুৎসা করলেন, এজেন্সি নামালেন। তবু তৃণমূলকে হারাতে পারলেন না। এটা একটা ইতিহাস। এটা একটা মডেল। দেশের মানুষ এই মডেলের উপর ভরসা রাখছেন। তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসকে ঘিরে নতুন ভারতের স্বপ্ন দেখছেন।