নিজস্ব প্রতিনিধি: শহর কলকাতা(Kolkata), এক বহমান জীবন্ত ইতিহাস। এই শহরের অলিতে গলিতে আজও সময় থমকে দাঁড়ায় ইতিহাসের সামনে এসে। মধ্য কলকাতার হিন্দ সিনেমার(Hind Cinema) কাছেই রয়েছে ঠাকুরদাস পালিত লেন(Thakurdas Palit Lane)। সেই সরু রাস্তার ওপরেই রয়েছে রামগোপাল সাহার(Ramgopal Saha) প্রতিষ্ঠিত শ্রীদূর্গা ভবন(Sree Durga Bhawan)। সেই বাড়িতেও ১৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রতিবছর হয়ে আসছে দুর্গাপুজো(Durga Puja)। মা এখানে সপরিবারে আসেন। ৪ দিন ধরে তিনি বিরাজ করেন বাংলার চিরাচরিত ডাকের সাজে। বাংলার বেশ কিছু প্রাচীন পুজো রয়েছে যেগুলি প্রাচীনত্বের ধারা বয়ে নিয়ে চলেছে বছরের পর বছর ধরে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমবর্ধমান তার জৌলুসও। তেমনই এক পুজো হল এই ঠাকুরদাস পালিত লেনের রামগোপাল সাহার বাড়ির পুজো।
ইতিহাসকে অনুসরন করলে দেখা যাবে, অবিভক্ত বাংলার এক বর্ধিষ্ণু ব্যবসায়ী ছিলেন রামগোপাল সাহা। সুরা বা মদের ব্যবসা ছিল তাঁর। তাঁরই পৈতৃক বাড়ির ঠাকুরদালানে প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপুজো। প্রায় ২০০ বছর আগে ঠাকুরদাস পালিত লেনে তৈরি হয়েছিল সাহা বাড়ি। সেই সময় ওই এলাকার জমিদার ছিলেন রামগোপাল সাহা। তিনিই প্রথম শারদীয়ার আরাধনা শুরু করেন। সাহা বাড়ির দুর্গা প্রতিমা তাঁর সময়কার সেই সাবেকিয়ানা ধরে রেখেছে। তাই উমা এখানে একচালা ডাকের সাজে সজ্জিতা। ঠাকুর বানানো থেকে ডাকের সাজের শিল্পী সকলেই বংশ পরম্পরাই কাজ করে আসছেন এই পরিবারে।
সাহা পরিবারে রথের দিন হয় কাঠামো পুজো। বাড়িতেই গড়া হয় ঠাকুর। ডাকের সাজের কাজও হয় ঠাকুরদালানেই। বর্ধিষ্ণু প্রাচীন পরিবারটিতে পশুবলির নিয়ম নেই। তবে সন্ধিপুজোর রয়েছে এক বিশেষত্ব। সাহাবাড়ির নিয়ম অনুযায়ী যদি কোনও নারী মায়ের কাছে মানত করে থাকেন এবং তা পূরণ হয় তাহলে দেবীর সামনে বুক চিঁড়ে তাঁকে রক্ত দান করতে হয়। এখানে অষ্টমী-নবমীতে সন্ধ্যাবেলায় চলে ধুনুচি নাচ।