এই মুহূর্তে




একের পর এক মৃত্যুশোক! যেভাবে বংশধারার সমাপ্তি ঘটেছিল রবি ঠাকুরের

courtesy google




নিজস্ব প্রতিনিধি : সাদামাঠা জীবনযাপন করতেন বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তবে দিনের বড় একটা সময়টাই তাঁর হেঁশেলেই কাটত, কারণ তিনি ছিলেন ভোজনরসিক। তাঁর জন্য ঠাকুর হেঁশেলে প্রতিদিন রান্না হত নানান পদ। স্ত্রী মৃণালিনী দেবীকে এর জন্য নিত্যনতুন পদ রান্না করতে হত। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, তিন কন্যা ও দুই পুত্রসন্তানের পিতা ছিলেন।কবিগুরু তাঁর গোটা জীবনে খুব কাছ থেকে অজস্র স্বজন পরিজনের মৃত্যু দেখেছেন।অনেকেই মনে করছেন শেষ জীবনে তিনি খুব ভেঙে পডে়ছিলেন।

অনেকের মনেই একটা প্রশ্ন জাগে যে, কীভাবে পার করেছিলেন সেই কঠিন মুহূর্তগুলিকে। বিশ্বকবির সমগ্র জীবন ধ’রে একপ্রকার মৃত্যুশোকের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল।এক শোক সামলে উঠতে না উঠতে আরেক শোক। শুরুটা হয়েছিল তাঁর ছোটবেলা থেকে। যখন তিনি অনেক ছোট ছিলেন তখন তাঁর ছোটভাই বুধেন্দ্রনাথ মারা যান। অবশ্য তাঁর স্মৃতিতে বিশেষ কোনো দাগ কাটে নি। কিন্তু জ্ঞান হয়ে ওঠার পর তিনি তাঁর মাকে(মা সারদা দেবী) হারিয়েছিলেন(১৮৭৫) মাত্র ১৩ বছর বয়সে।রবীন্দ্রনাথের বিয়ের রাতেই মারা গিয়েছিল তাঁর জামাইবাবু।১৮৮৪-তে, হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর (সেজদাদা), ১৮৮৪-তে, সেই একই বছরে মারা গিয়েছিলেন কাদম্বরী দেবী, রবীন্দ্রনাথের নতুন বৌঠান (যিনি আফিম খেয়ে আত্মহত্যা করেন)। এছাড়াও রবীন্দ্রনাথের ভ্রাতা বীরেন্দ্রনাথ ও প্রফুল্লময়ীর একমাত্র পুত্র বলেন্দ্রনাথ ছিলেন অত্যন্ত প্রিয় ছিল রবীন্দ্রনাথ ও মৃণালিনী দেবীর কাছে। তাঁকেও চোখের সামনে হারিয়েছিলেন বিশ্ব কবি।

স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে : ১৯০২ সালে স্ত্রী মৃণালিনী দেবীকে হারান তিনি। স্ত্রী বিয়োগ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই মেজ কন্যা রানী অর্থাৎ রেনুকা দেবী যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। আর সেইসময় এই রোগের কোনো চিকিৎসা ছিল না। স্ত্রীর মৃত্যুর ৯ মাসের মাথায় রবীন্দ্রনাথ হারালেন তাঁর মেয়ে রানীকে।

এরপর হঠাৎ পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসুস্থতার খবর পান রবীন্দ্রনাথ। তখন দ্রুত কলকাতায় আসেন রবীন্দ্রনাথ, কিন্তু প্রান হারান দেবেন্দ্রনাথও। এরপর তাঁদের পরিবারও ভেঙে যায়। রবীন্দ্রনাথ পুত্র রথীন্দ্রনাথ যখন যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে গিয়েছিলেন, তখন ছোট ছেলে শমীন্দ্রনাথ ও ছোট কন্যা মীরা দেবীকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে ছিলেন। ছেলে শমীন্দ্রনাথ ছিলেন খুব কল্পনাপ্রবণ। তিনিও চেয়েছিলেন একদিন বাবার মত হতে। ছুটি কাটাতে বন্ধুদের সঙ্গে মুঙ্গেরে গিয়ে কলেরায় আক্রান্ত হয়েছিলেন শমীন্দ্র। এরপরেই মারা গিয়েছিলেন তিনি। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর।

রবীন্দ্রনাথের বড় কন্যা বেলাও রানীর মত যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। তাঁকেই বাঁচানো যায়নি। কবির পাঁচ পুত্র-কন্যার মধ্যে বেলা, রানী ও শমীন্দ্র কবির জীবদ্দশাতেই মারা গেছিলেন। বেঁচে ছিলেন পুত্র রথীন্দ্রনাথ ও কন্যা মীরা দেবী।

কবি পুত্র রথীন্দ্রনাথের সন্তান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা ছিলনা, তাই রথীন্দ্রনাথ নন্দিনী নামের একটি মেয়েকে দত্তক নিয়েছিলেন। অপরদিকে রবীন্দ্রনাথের মেয়ে মীরা আর জামাতা নগেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের পুত্র নীতিন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর বোন নন্দিতা গঙ্গোপাধ্যায় সেইসময় রবীন্দ্রনাথের একমাত্র জীবিত বংশধর ছিলেন। জার্মানিতে পড়াশোনাকালে নীতিন্দ্রনাথও মারা যান। ১৯৪১ সালে পরলোক গমন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এর কুড়ি বছর পর ১৯৬১ সালে মারা যান পুত্র রথীন্দ্রনাথও। কবির বংশধর বলতে কেবল কন্যা মীরা দেবী জীবিত ছিলেন। তবে, তিনিও তাঁর মেয়ে নন্দিতার মৃত্যুর ঠিক দুই বছর পর অর্থাৎ ১৯৬৯ সালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

তবে এত মৃত্যু দেখা স্বত্তেও কলম থামান নি কবি। ঠিক যেন নিজেকে কঠিন করে নিয়েছিলেন। একের পর এক মৃত্যু শোকেও নিজেকে কঠোর করে রেখেছিলেন তিনি।  ভেতরটা নরম হলেও বাইরেটা শক্ত। হয়তো তাঁর আবেগ অনুভূতি সব কলমের মধ্য দিয়ে পাতায় তুলে ধরেছিলেন যা আজও আমাদের হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছে।




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

দুর্গাপুজোয় কোন রঙের জামা পড়বেন ? রাশি মিলিয়ে বেছে নিন! কাটবে সংকট

এবছর দেবী দূর্গা আসছে কীসে ? অশুভ ইঙ্গিত বহন করেছে না তো ?

দেবকুলের ইঞ্জিনিয়ার! স্বর্গলোক থেকে সোনার লঙ্কা! জানেন কী বিশ্বকর্মার আশ্চর্য আবিষ্কার সম্পর্কে ?

আসছে রাধাষ্টমী! জেনে নিন কেন পালন করা হয় রাধার জন্মদিন

বিশ্বকর্মার বাহন হিসেবে হাতিকে বেছে নেওয়া হয়েছিল কেন ?

‘যুদ্ধে নিহত অসুরদের প্রাণ ফিরিয়ে দিত’ জেনে নিন কে ছিলেন এই দেবতা ? কীভাবে সঞ্জীবনী মন্ত্রের বর লাভ করেছিলেন ?

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর