নিজস্ব প্রতিনিধি : সারা ভারতে অক্ষয় তৃতীয়ার উৎসব উদযাপিত হয়ে থাকে।একটি জনপ্রিয় উৎসব হল অক্ষয় তৃতীয়া।এই উৎসব বসন্ত ও গ্রীষ্ম ঋতুর উৎসব। ভারতীয় শাস্ত্র ও পুরাণে এই উৎসবের গুরুত্ব অসীম। ভবিষ্য পুরাণ অনুসারে, এই দিনে সম্পাদিত সমস্ত কর্মের ফল অক্ষয় হয়, তাই এই দিনের নাম ‘অক্ষয়’। অক্ষয় শব্দের অর্থ যা কখনো কমবে না। এই অর্থে ‘সমৃদ্ধি, আশা, আনন্দ, সাফল্য’ অর্থ কমবে না বলে মনে করা হয়। অন্যদিকে তৃতীয়া শব্দের অর্থ- চাঁদের তৃতীয় পর্ব। বৈশাখের বসন্ত মাসের তৃতীয় চান্দ্র দিনে এটি পালন করা হয় বলে এর নামকরণ করা হয়েছে । এই দিনের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।
পুরাণ কথা : ভবিষ্য পুরাণ ছাড়াও বিষ্ণু ধর্মসূত্র, মৎস্য পুরাণ, নারদীয় পুরাণ এবং ভবিষ্য পুরাণেও এই উৎসবের বিশদ উল্লেখ রয়েছে এবং এই ব্রত ঘিরে রয়েছে নানা কাহিনী। অক্ষয় তৃতীয়ায় কোনও ব্যক্তি স্নান, দান, জপ, তপস্যা, যজ্ঞ প্রভৃতি কর্মে মনোনিবেশ করলে তা শুভ ও চিরন্তন ফল লাভ করে বলেই প্রচলিত বিশ্বাস। মনে করা হয় এই দিনে ভাল কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলে ভাল ফল লাভ হয়। মনের ইচ্ছেও পূরণ হয়ে থাকে।
শাস্ত্র মত : শাস্ত্র মতে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন জলে ভর্তি কলসি, পাখা, খড়ম, জুতো, ছাতা, গরু, স্বর্ণ পাত্র সহ অনেক কিছুর দান পুণ্যদায়ী হয়। এই দানের পিছনে প্রচলিত বিশ্বাস হল যে এই দিনে দান করা সমস্ত জিনিস গরমকালে স্বর্গে প্রাপ্ত হবে। এই ব্রতে কলস, মাটির সড়া, মাটির পাত্র ইত্যাদি রেখে পুজো করা হয়।
কুমারী ব্রত : বুন্দেলখণ্ড অঞ্চলে কুমারী কন্যারা গান গেয়ে পালন করেন এই ব্রত। অক্ষয় তৃতীয়া থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত খুব ধুমধাম করে পালন করা হয় ব্রত ও পূজা। কুমারী মেয়েরা নিজেদের ভাই, বাবা, তথা গ্রামের বাড়ি ও কুটুম্বের সদস্যদের মধ্যে শুভ জিনিস বিতরণ করেন ও গান গেয়ে যান। তবে এই গানের মধ্যে দিয়ে মনের মানুষের বাড়ি যেতে পারেন না কুমারীগণ। এতে অনেকের মন খারাপ ফুটে ওঠে।
কৃষকদের জন্য উৎসব : নববর্ষের শুরুর একটি শুভ দিন হিসাবে বিবেচিত হয় দিনটি। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে কৃষিকাজ শুরু করা শুভ হয়। সমৃদ্ধি আসে কৃষক পরিবারের জীবনে। এই তিথিতে চাঁদ অস্ত যাওয়ার সময় রোহিণী এগিয়ে থাকলে ফসলের ভাল হবে আর পিছিয়ে থাকলে ফলন ভাল হবে না বলে কৃষকদের মধ্যে প্রচলিত বিশ্বাস রয়েছে।