নিজস্ব প্রতিনিধি, লন্ডন: এ বিশ্বে প্রতিদিন কত যে অবাক কাণ্ড ঘটে, তা বলে বোঝানোর নয়। এমনই এক অবাক ঘটনার সাক্ষী থাকলেন ব্রিটেনের ডুডলে লাইব্রেরির এক কর্মী। আর পাঁচটা দিনের মতোই নিজের মনে কাজ করে যাচ্ছিলেন তিনি। আচমকাই তাঁর সামনে এসে দাঁড়ালেন সত্তরোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ। একটি বই ফেরত দিলেন। আর ওই বই ফেরত নিতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ লাইব্রেরির কর্মীর। কেননা, ১৯৬৪ সালে ওই বইটি পড়ার জন্য পাঠককে দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে বই না ফেরানোর জন্য জরিমানার পাহাড় জমেছিল। ভারতীয় মুদ্রায় দাঁড়িয়েছিল ৪২ লক্ষ টাকা। তবে সততা দেখানোর জন্য বই যিনি নিয়েছিলেন সেই পাঠকের জরিমানা মকুব করেছে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিস সংবাদমাধ্যম ‘মেট্রো’ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, ১৯৬৪ সালে ১৭ বছরের কিশোর ডেভিড হিকম্যান ডুডলে লা্ইব্রেরির অন্যতম পাঠক ও সদস্য হিসেবে ‘দ্য ল অফ মোটরিস্ট’ বইটি পড়ার জন্য বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিল। আর্থিক দিক থেকে স্বচ্ছ্বল ডেভিডের গাড়ির সঙ্গে আচমকাই একদিন ডুডলের তৎকালীন মেয়র কাউন্সিলর ডব্লিউজিকে গ্রিফিথের গাড়ির সংঘর্ষ ঘটে। এ নিয়ে আইনি সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়ে ডেভিড। আইনি লড়াইয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় এক সময়ে বইটি ফেরতের কথা বেমালুম ভুলে যায় সে। টেবিলের ড্রয়ারেই থেকে যায় বইটি। ডুডলে থেকে লন্ডনে ঘাঁটি গাড়েন।
সেই দিনের ১৭ বছরের কিশোর বর্তমানে একাত্তর বছরের এক পেনশনভোগী বৃদ্ধ। সম্প্রতি পুরনো জিনিসপত্র ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে ‘দ্য ল অফ মোটরিস্ট’ বইটি চোখে পড়ে তাঁর। এক অনুশোচনা আর আপরাধবোধে ভুগতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত ডুডলের লাইব্রেরিতে বই ফেরাতে নিজেই হাজির হন। লাইব্রেরির লেট ফি’র নিয়ম অনুযায়ী, দেরি করে বই ফেরানোর জন্য প্রতিদিন ২০ পেন্স করে জরিমানা গোনার কথা। সে হিসেবে ৫৮ বছরে ৪২০০০ পাউন্ড জরিমানা গোনার কথা ছিল ডেভিড হিকম্যানের। কিন্তু তাঁর বই ফেরত না দেওয়ার কারণ সুনে মন গলেছে ডুডলে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষের। পুরো জরিমানার টাকা মকুব করে দিয়েছেন।