নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: শুরু ২০১৯ থেকে।
করোনা ভাইরাসের শৃঙ্খল ভাঙতে মোদি সরকার ২০১৯-য়ের ২৪ মার্চ আচমকাই ঘোষণা করেছিল ২১ দিনের লকডাউন। লকডাউনের পর মানুষ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলেও নতুন করে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় একাধিক রাজ্যে জারি হয়েছে বিধিনিষেধ। কোথাও কোথাও জারি হয়েছে নৈশ কার্ফু। পরিস্থিতিতে আরও জটিল করে তুলেছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন।
প্রায় তিন বছর হতে চলল, দেশ দেখেছে মৃত্যু মিছিল। অক্সিজেনের অভাবে মানুষ বেঘোরে মরেছে। কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, তা কেউ বলতে পারছে না। আবহাওয়া বদলে যাওয়ার মতো করোনা আর ওমিক্রম মেজাজি হয়ে উঠেছে। আর রোগী সামাল দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন চিকিৎসকেরা। মানসিক অবসাদ তাদের গ্রাস করে নিয়েছে। পরিবারের বাকি সদস্য যাতে এই দুই ভাইরাসে আক্রান্ত না হন, তার জন্য অনেক চিকিৎসক থাকছে অন্যত্র। বাড়ছে মানসিক দূরত্ব।
তেমনই একজন চিকিৎসক ডা. সমীর খুরানা (নাম পরিবর্তিত)। দিল্লির বাসিন্দা এই চিকিৎসকের বয়স মাত্র ৩৯ বছর। গত দু বছর ধরে পরিবার বিচ্ছিন্ন। রয়েছেন একটি ফ্ল্যাটে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ডা. সমীর খুরানা বলেন, ‘বিশ্বাস করুন। আর পারছি না। আমার হাসপাতালে প্রথম যেদিন করোনা রোগী ভর্তি হল, সেই দিনটির কথা মনে আছে। সবে শিফট চেঞ্জ হয়েছে। হাসপাতালে ঢুকে শুনলাম, করোনায় আক্রান্ত এক রোগী ভর্তি হয়েছেন।তারপর থেকে আজ পর্যন্ত কতজনকে দেখলাম, তা আর বলতে পারব না। এখন আর পেরে উঠছি না।’
প্রায় একই বক্তব্য দিল্লির একটি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাজিদ আগরওয়ালের।‘করোনা সংক্রমণ শুরু হতেই মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। সেই আতঙ্ক আমাদেরও গ্রাস করেছিল। এক অজানা ভয় আমাদের তাড়িয়ে তাড়িয়ে বেরিয়েছে। পরিবারকে বাঁচাতে গত কয়েক বছর ধরে আলাদা রয়েছি। ছেলে-মেয়ে-বউ-এই তিন বছরে কারও মুখ দেখিনি। জানি না কবে তাদের সঙ্গে দেখা হবে। ’