নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘ছোট পরিবার, সুখী পরিবার’। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবার ছোট হওয়া ভবিষ্যতের জন্য অশনিসঙ্কেত বয়ে আনতে চলেছে। বিশ্বের বিশাল সংখ্যক মানুষ হারাচ্ছেন প্রজনন ক্ষমতা। তার ফলেই চলতি শতাব্দীর শেষের দিকে বিশ্বের ২০৪টি দেশের মধ্যে ১৯৮টি দেশেই কমতে চলেছে জনসংখ্যার হার। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমন তথ্যই উঠে এসেছে। ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ভারতে যেখানে স্বাধীনতার পরে জন্মহার ছিল ৬.২ শতাংশ, তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ শতাংশের নিচে। ২০৫০ সাল নাগাদ জন্মহার পৌঁছতে পারে ১.২৯ শতাংশে। ২১০০ সালে জন্মহার কমে দাঁড়াবে ১.০৪ শতাংশে।
বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী ‘দ্য ল্যানসেটে’ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের (আইএইচএমই) উদ্যোগে বিশ্বের জন্মহার নিয়ে এক গবেষণার আয়োজন করা হয়েছিল। গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন ১৫০টিরও বেশি দেশের ৮ হাজারের বেশি বিজ্ঞানী। ওই গবেষণাতে বলা হয়েছে, ২১০০ সাল নাগাদ বিশ্বের ২০৪টি দেশের মধ্যে ১৯৮টির জনসংখ্যা কমে যাবে। ধনী দেশগুলির তুলনায় দরিদ্র দেশগুলোয় জন্মহার বেশি থাকবে। তখন বিশ্বজুড়ে জম্মানো দুটি শিশুর একটি জন্ম নেবে দক্ষিণ আফ্রিকার সাব–সাহারা অঞ্চলে জন্ম নেবে। শুধু সোমালিয়া, টোঙ্গা, নাইজার, চাদ, সামোয়া ও তাজিকিস্তান জনসংখ্যার বর্তমান সংখ্যা ধরে রাখতে পারবে।
আইএইচএমইয়ের গবেষক নাতালিয়া ভি ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে প্রজননহার ও জন্মহার হ্রাস পাওয়ার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক ক্ষমতার ভারসাম্য পুরোপুরি পাল্টে যেতে পারে। এতে সমাজ পুনর্গঠনের প্রয়োজন হতে পারে। একদিকে জনসংখ্যা কমে যাওয়ায় সম্পদশালী দেশগুলো তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে যেমন হিমশিম খাবে, তেমনই যে ছয়টি দেশে জনসংখ্যা বাড়বে, তা মোকাবিলা করতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেতে হবে দরিদ্র দেশগুলিকে।’