নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচনের(Panchayat Election) মনোনয়ন দাখিলকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলার দুই প্রান্ত। উত্তরবঙ্গের(North Bengal) উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর মহকুমার চোপড়া(Chopra) এবং দক্ষিণবঙ্গের(South Bengal) দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুর মহকুমার ভাঙড়(Bhangar)। চোপড়ায় এদিন বাম-কংগ্রেস প্রার্থী তথা সমর্থকদের মিছিলে গুলি চালনার ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় প্রাণ হারান এক বাম প্রার্থী। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও ২জন। অন্যদিকে ভাঙড়ে ISF প্রার্থী ও সমর্থকদের ওপর গুলি চালনার ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে ওই দলেরই এক প্রার্থীর। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন দলেরই ৩ সমর্থক। এই দুই ঘটনাতেই অভিযোগের আঙুল উঠেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) দিকে। কিন্তু এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ডহারবারে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) সাফ জানিয়ে দেন, চোপড়া ও ভাঙড় – কোনও ঘটনাতেই তৃণমূল জড়িত নয়। বরঞ্চ এদিনের অশান্তির ঘটনার জন্য তিনি ISF এবং বাম(Left) ও বিজেপিকেই(BJP) দোষী সাব্যস্থ করেছেন।
আরও পড়ুন ভাঙড়-চোপড়ার ঘটনায় তৃণমূল জড়িত নয়, দাবি মুখ্যমন্ত্রীর
ঠিক কী জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের বিঁধতেই শুরু করেন ভাঙড়ের ঘটনাকে টেনে এনে। তিনি বলেন, ‘ভাঙড়ে যারা বিরোধী, নতুন জিতেছে, তারাই ভাঙচুর করেছে প্রথম। আজকের ঘটনা প্রসঙ্গে পুরোটা জানি না। কিন্তু, যতটা শুনেছি তার ওপর ভিত্তি করে প্রশাসনকে বলেছি শক্তহাতে ব্যবস্থা নিতে। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদ ভাই-বোনদের একাংশকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’ এরপরেই তিনি নাম না করে বেঁধেন বিজেপিকে। বলেন, ‘এখানে তো তবু ভোটে লড়াই করার জন্য মানুষ মনোনয়ন দিচ্ছে। উত্তরপ্রদেশে তো ভোটে লড়তেই দেওয়া হয় না। পকসো মামলায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয় না। ধর্মের নামে সুড়সুড়ি দিয়ে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যে প্রায় ৭৩ হাজার ৭৪ হাজার বুথ। সেখানে মাত্র তিনটি অঞ্চলে তিনটি গন্ডোগোল হয়েছে এবং তাও স্থানীয়ভাবে।’
আরও পড়ুন মুর্শিদাবাদ পুরসভা হাতছাড়া হতে পারে তৃণমূলের
এরপরেই মমতা আক্রমণ শানেন বামেদের। বলেন, ‘আমাকে আপনারা কত বার মেরেছেন! আমি কিন্তু কোনও প্রতিবাদ করিনি। কারণ আমরা বলেছিলাম বদলা নয় বদল চাই। পঞ্চায়েতের ইতিহাস আমার কাছে নতুন নয়। ২০০৩ সালে CPM-এর আমলে সম্ভবত পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ৩৬ জন মারা গিয়েছিলেন।২০১৩ সালে মীরা পাণ্ডে নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে এসে ভোট করিয়েছিলেন। ৩৯ জন মারা গিয়েছিলেন। আমাদের দলকে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিজের মনোনয়ন কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য। রাজ্যে লক্ষাধিক মনোনয়ন জমা পড়েছে, যা অতীতে কোনও রাজ্যে পড়েনি। ইসলামপুর এবং চোপড়ায় যে সমস্যা হয়েছে তার সঙ্গে আমাদের দল কোনওভাবেই যুক্ত নয়। যারা করেছে তাদের দল টিকিট দেয়নি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে অনেক সময় একই পরিবারের অনেকে দাঁড়ান। ফলে তাঁদের পারিবারিক সমস্যা দেখা যায়। তৃণমূল কোনওভাবেই এইসব ঘটনায় যুক্ত নয়।’