নিজস্ব প্রতিনিধি: হরিদ্বারের গঙ্গায় দেশের হয়ে জেতা পদকগুলি ভাসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বজরং-স্বাক্ষি মালিকরা। তবে আপাতত তাঁদের সেই সিদ্ধান্ত তাঁরা স্থগিত রেখেছেন। কারণ কৃষক নেতারা তাঁদের কাছে গঙ্গায় পদক না ভাসোনার অনুরোধ করায় বজরংদের এই সিদ্ধান্ত বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩-এপ্রিল থেকে দিল্লির যন্তর-মন্তরের সামনে ধর্না মঞ্চ গড়ে বজরং-ভিনেশরা তাঁদের দ্বিতীয় দফার আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তাঁদের দাবি, বর্তমান ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন-এর প্রসিডেন্ট ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং শারীরিক নির্যাতন করেন। তাই অবিলম্বে তাঁকে গ্রেফতার এবং পদত্যাগ করতে হবে।
এই দাবিতে চলা জাতীয় কুস্তিগীর আন্দোলনে রীতিমত ঝড় বইতে শুরু করে গোটা দেশে। এমনকি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেরও বহু আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় এই ইস্যুতে বজরংদের সমর্থন জানান। দেশের বহু খেলোয়াড়রও তাঁদের সমর্থন জানিয়েছেন বজরংদের। এরপর তাঁদের ওপর দু-দুবার পুলিশি নির্যাতনও করা হয়। গত কয়েকদিন আগে দিল্লি পুলিশের নির্মম অত্যাচারের শিকারও হন তাঁরা। এই ঘটনার প্রতিবাদেই দেশের হয়ে অর্জিত পদকগুলি হরিদ্বারে গিয়ে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছিলেন তাঁরা। বজরংদের এই সিদ্ধান্তে দেশজুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রকের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড়ও ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সর্বত্র।
বুধবার এই ইস্যুতেই কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় মুখর হন কংগ্রেস সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী কপিল সিব্বল। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারে সমালোচনা করে সিব্বল বলেন, ব্রিজভূষণ শরণ সিং-এর বিরুদ্ধে মহিলা কুস্তিগীরদের শারীরিক নির্যাতন করার মতো অভিযোগ উঠেছে। যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর একটি বিষয়। সুতরাং কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত গোটা বিষয়টা গুরুত্বসহকারে দেখে ব্রিজভূষণ শরণকে সিং-কে গ্রেফতার করা। সরকারের নীরব থাকা প্রসঙ্গেও ক্ষোভ উগরে দিতে ভোলেননি বিশিষ্ট আইনিজীবী। তাঁর মতে, ব্রিজভূষণ যেহেতু কেন্দ্রীয় শাসকদলের একজন সাংসদ। তাই তাঁকে আড়াল করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যা অত্যন্ত লজ্জার একটি বিষয়। এবং দেশের শীর্ষ আদালতে দাঁড়িয়ে তিনি কুস্তিগীরদের সমর্থনে এই মামলা লড়ার আশ্বাসও দেন।
আরও জানতে পড়ুন: আগামী মরশুমে আল-হিলালের জার্সি গায়ে তুলছেন মেসি
শুধু কপিল সিব্বলই নন, কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছেন রাজ্যের সাংসদ সৌগত রায়ও। তাঁর মতে, অবিলম্বে ব্রিজ ভূষণ শরণ সিং-এর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এদিকে ব্রিজভূষণ শরণ কিভাবে এখনও বহাল তবিয়েত রয়েছেন এবং কুস্তিগীরদের আন্দোলন নিয়ে নানারকম মন্তব্য করছেন তা নিয়েও সরব হন আন্দোলনরত কুস্তিগীরদের অন্যতম সদস্য ভিনেশ ফোগত।