৭৫ বর্ষপূর্তি স্বাধীনতা দিবস (INDEPENDENCE DAY), তা কারও অজানা নয়। ১৫ অগাস্ট ঋষি অরবিন্দ ঘোষের-ও জন্মদিবস, সে কথাও জানেন সকলে। চরমপন্থী এই নেতার পদধূলিতে ধন্য মেদিনীপুর। তাঁর মামা দাদু ছিলেন সমাজ ও শিক্ষা সংস্কারক ঋষি রাজনারায়ণ বসু।
১৬ বছর ধরে গভর্মেন্ট জিলা স্কুল (মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুল)- এর প্রধান শিক্ষক ছিলেন রাজনারায়ণ। তাঁর বড় মেয়ে স্বর্ণলতা দেবীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন কৃষ্ণধন ঘোষ। স্বর্ণলতা ও কৃষ্ণধনের পুত্র অরবিন্দ।
রাজনারায়ণ বসু থাকতেন কলেজিয়েট স্কুল সংলগ্ন ভবনে। সেখানেই বিয়ে হয়েছিল তাঁর বড় মেয়ের। উপস্থিত ছিলেন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
১৯৫৭ সাল থেকে স্কুল সংলগ্ন এই ভবন ব্যবহৃত হত মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষদের আবাসন হিসেবে। ২০১৩ সালে এই ভবন মেদিনীপুর কলেজের কাছ থেকে দাবি করে কলেজিয়েট স্কুল কর্তৃপক্ষ। তা নিয়ে আজও চলে দড়ি টানাটানি। স্কুল না কলেজ কার রয়েছে যোগ্য দাবি, তা বিচারাধীন।
বন্ধ হয়ে পড়ে আছে ঐতিহ্যবাহী ভবন। এখনও জোটেনি হেরিটেজ তকমা। শহর-জেলা-অখণ্ড মেদিনীপুর-রাজ্য-দেশের অহংকার আজও তালাবন্দি। আরও একটা স্বাধীনতা দিবসের চৌকাঠে পা রাখছি আমরা। স্বাধীনতার স্বাদে আপ্লুত হয়ে দিন উদযাপনের আড়ম্বরের মাঝে পরাধীন হয়ে রইল ঐতিহ্যবাহী ভবন। আদালতের নির্দেশ, মেনে চলতে হবে ‘স্ট্যাটাস কো’। অহংকারের ভূমির মুক্তির অপেক্ষায় দিন গুনছেন ঋষি অরবিন্দ, ঋষি রাজনারায়ণ বসু, তাঁরা যে আজও আছেন, থাকবেন। তাঁরা যে সকলের হৃদয়েই বিরাজমান।
বাড়তি কথা: ভারতের যে পতাকা আজ দেখছেন সেই পতাকার বিবর্তন হয়েছে বছরের পর বছর। ঋষি অরবিন্দের বিশেষ সহযোগী ছিলেন অস্ত্র গুরু হেমচন্দ্র কানুনগো। শচীন্দ্র প্রসাদ বোস ও হেম দু’জনে মিলে তৈরি করেছিলেন জাতীয় পতাকা। সেই পতাকা অবশ্য এখন যে পতাকা দেখেন, তা নয়। তবে জাতীয় পতাকা হিসেবে ভারতে এই পতাকাই প্রথম উত্তোলিত হয় কলকাতার পার্সি বাগান স্কোয়ারে। হেম ও শচীন্দ্রের সেই নকশার পতাকা। সময়টা ১৯০৬ সালের ৭ অগাস্ট।
নিসর্গ নির্যাস মাহাতো