নিজস্ব প্রতিনিধি: ছেলের পড়াশোনার সুবিধার জন্য স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে শহরে থাকেন। স্বামী থাকেন গ্রামে। সঙ্গে বৃদ্ধ বাবা-মা। তাঁদের দেখভাল এবং বাড়ির কাজের জন্য গ্রামেরই এক মহিলাকে পরিচারিকার কাজে রাখা হয়েছিল। সেই মহিলা আবার স্বামী বিচ্ছিন্না। তাঁরও এক ছেলে আছে, তবে সে থাকে বাবার সঙ্গে। এহেন মহিলার সঙ্গেই সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সেই স্বামী যিনি কিনা আবার গ্রামেরই CPIM নেতা। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেই পরিচারিকার সঙ্গে দিনের পর দিন সহবাস চালিয়ে গিয়েছেন ওই বাম নেতা। প্রায় ১ বছরের সেই সহবাসের জেরেই এখন ওই পরিচারিকা ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু এখন সেই বাম নেতা আর পরিচারিকাকে বিয়ে করে ঘরে তুলতে চাইছেন না। মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তাঁর দিক থেকে। তার জেরে ওই মহিলা দ্বারস্থ হন পুলিশের। বাম নেতার বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস ও ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার হয়েছেন ওই CPIM নেতা। ঘটনাস্থল পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdhwan) জেলার উত্তর সদর মহকুমার ভাতার থানা(Bhatar PS) নিত্যানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকার পাটনা গ্রাম।
আরও পড়ুন পাহাড়ে Masterstroke মমতার, পাট্টা পাবেন বাসিন্দারা
জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার পাটনা গ্রামের বাসিন্দা শেখ জামাল(Jamal Sheikh) CPIM-এর ভাতার-১ ব্লকের এরিয়া কমিটির সদস্য। তাঁর এক সন্তান রয়েছে। সন্তানের পড়াশোনার সুবিধার্থে তাকে নিয়ে বর্ধমান শহরের কাছে আলাদা থাকেন স্ত্রী। জামালের বাড়িতে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধ বাবা-মা। তাঁদের দেখভাল এবং বাড়ির কাজের জন্য ওই মহিলাকে পরিচারিকার কাজে নিয়োগ করেছিলেন তিনি। সেই মহিলাই এখন অন্তঃসত্ত্বা। বুধবার রাতে ভাতার থানায় তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন পরিচারিকা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে জামালকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার দুপুরে তাঁকে তোলা হয় বর্ধমান আদালতে। এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। তৃণমূলের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। বাম নেতৃত্বের দাবি, সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে জামালকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল তৃণমূলে(TMC) যোগ দেওয়ার জন্য। তিনি দলবদলে রাজি না হওয়ায় এখন তাঁকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার ওই পরিচারিকার দাবি, জামাল গ্রেফতার হতেই CPIM-এর কর্মীরা তাঁকে হুমকি ধমকি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন কেন্দ্রকে কড়া বার্তা রাজ্যের, বৈঠকে ‘না’ নবান্নের
ঘটনার জেরে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছে, উন্নয়নের কারণে সাধারণ মানুষ তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন। তাই তাঁদের ওই ধরনের চক্রান্তের কোনও প্রয়োজনই নেই। আইন আইনের পথে চলবে। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। সিপিএম ক্ষমতা থেকে সরে গেলেও লালপার্টির নেতাদের লালসা এখনও যায়নি। মেয়েদের ওপর অত্যাচার করতে এখনও তাদের জুড়ি মেলা ভার। এই CPIM-এর হার্মাদরাই বাংলার বুকে ৩৪ বছর ধরে গণধর্ষণ চালিয়ে গিয়েছে। মরিচঝাঁপি, বাণতলা, ধানতলা, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম তার জ্বলন্ত উদাহরণ। ক্ষমতা থেকে সরে গিয়েও জামালদের মতো নেতাদের লালসা আজও কমেনি। দাবি তৃণমূলের।