নিজস্ব প্রতিনিধি: বুড়ো হলেও মনে তাঁর যৌবন। তাই লজ্জার মাথা খেয়ে কিনতে গিয়েছিলেন তিনি সেক্সটয়। কিন্তু সেটি কিনতে গিয়েই যে এতবড় কেলোর কীর্তি ঘটে যাবে সেটা কে জানতো! নিজে তো হাসিঠাট্টার পাত্র হচ্ছেনই সেই সঙ্গে একজনকে হাজতেও যেতে হল। তার থেকেও বড় কথা সেই রসরাজ বুড়োকে এখন অনেক বেশি সামাজিক বিড়াম্বনার মুখে পড়তে হচ্ছে। কেননা তিনি অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক। বুড়ো বয়সে এসে তাঁর সেক্সটয়ের চাহিদা দেখে এখন সমাজের অনেকেই ছিঃ ছিঃ করছেন। যদিও পাল্টা প্রশ্নও উঠেছে যে, শিক্ষক বলে কী শরীরের খিদে থাকতে নেই নাকি বুড়ো বয়সে শরীরের খিদে থাকতে নেই!
জানা গিয়েছে, যে শিক্ষককে ঘিরে এই ঘটনা ঘটেছে তিনি উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের বেলকোবা এলাকার এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ২০২০ সালে তিনি সেক্স ডল কিনতে শিলিগুড়ির হংকং মার্কেটের একটি দোকানে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় ওই দোকানের মালিক পবন দাস তাঁকে জানান, ওই পুতুল কিনে আনতে অর্ডার দিতে হবে। কেননা তা বিদেশ থেকে আনাতে হবে। ওই শিক্ষক তাতে রাজিও হয়ে যান। তিনি ১ লক্ষ টাকা দিয়ে সেই পুতুল বুকও করেন। পরে সেই পবন ওই শিক্ষককে জানায় যে, বিদেশ থেকে তার অর্ডার করা পুতুল এসে গিয়েছে। কিন্তু সেই পুতুল তাঁর বাড়িতে ডেলিভারি দিতে গিয়ে পুলিশের চোখে পড়ে গিয়েছে। পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে ডেলিভারি ম্যান ওই শিক্ষকের নামধাম জানিয়ে দিয়েছে পুলিশকে। ফলে গোটা বিষয়টি এলাকার সবাই জানতে পেরে যেতে পারে এবং তার জেরে সামাজিক ভাবে মানসম্মান ক্ষুন্ন হতে পারে ওই শিক্ষকের। তবে পুলিশকে ১ লক্ষ টাকা ঘুষ দিলে তাঁরা পুতুলটি ছেড়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিষয়টি ছেড়ে দেবে বলেও জানিয়েছে।
পবনের কথায় কিছুটা ভীত হয়েই ওই শিক্ষক তাঁকে আরও ১ লক্ষ টাকা পাঠিয়েও দেন। কিন্তু পুতুল আর তিনি পাননি। উপরন্তু পবন বার বার একই কথা শুনিয়ে বিগত দুই বছর ধরে তাঁর কাছ থেকে দফায় দফায় ৩৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। এমনকি ওই শিক্ষকের দাবি, পবনের দাবি মতো টাকার যোগান করতে গিয়ে তাঁকে জমিজমাও বিক্রি করতে হয়েছে। শেষে চলতি মাসে প্রথমদিকে তিনি বাধ্য হন পুলিশকে গোটা বিষয়টি জানাতে। তার জেরে ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ পবনকে গ্রেফতার করেছে। এদিনই তাকে আদালতে তোলাও হয়। তদন্তের সূত্রেই পুলিশ জানতে পেরেছে পবন শিলিগুড়িতে একটি ড্যান্স বারেরও মালিক। একই সঙ্গে সে শুধু এই শিক্ষকের পাশাপাশি আরও কয়েকজনকে এইভাবে প্রতারিত করেছে। তবে এত কিছুর পরেও এলাকাবাসীর প্রশ্ন একটাই, ‘হতচ্ছাড়া বুড়োর রস কমেনি এখনও। এখন সেক্সটয় খুঁজছে, স্কুলে না জানি কী না কী করে এসেছে!’ পবন অবশ্য জানিয়েছে সে ৩৭ নয়, ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়েছে এই শিক্ষকের কাছ থেকে। পুলিশ তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তার প্রমাণও পেয়েছে।