নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলায়(Bengal) বসবাসকারী মতুয়া(Matua) সম্প্রদায়ের মানুষের দাবি, তাঁদের নাগরিকত্ব(Citizenship) দিতে হবে। যদিও তাঁরা যেমন দীর্ঘদিন ধরে এপার বাংলায় বসবাস করছেন তেমনি তাঁদের ভোটাধিকারও আছে। আছে রেশন কার্ড, আধার কার্ডও। মতুয়াদের সেই নাগরিকত্ব প্রদানের আশ্বাস দিয়েছে গেরুয়া বাহিনী। সেই আশ্বাস দিয়েই বাংলার মাটিতে মতুয়া ভোটে বলীয়ান হয়েছে বিজেপি(BJP)। মতুয়া ভোটেই ভর দিয়ে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে খুব কম করেও ৫টি লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে অবশ্য কিছুটা হলেও মতুয়া ভোট ফেরত পেয়েছিল তৃণমূল(TMC)। সামনেই আসছে পঞ্চায়েত নির্বাচন আর বছর ঘুরলেই আসবে লোকসভা নির্বাচন। কিন্তু এখনও কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন মোদি সরকার(Modi Government) মতুয়াদের নাগরিকত্ব প্রদান করতে পারেনি। কেননা সেই নাগরিকত্ব দিতে গেলে যে CAA আইন লাগু করতে হবে সেই আইনের সহায়ক আইন এখনও প্রণয়নই করে উঠতে পারেনি বিজেপি সরকার। এই অবস্থায় বিজেপিকে বেশ চাপে ফেলে দিলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ তথা কবিয়াল ও নদিয়া জেলার হরিণঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার(Ashim Sarkar)।
আরও পড়ুন সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, লুট, অগ্নিসংযোগ ঠেকাতে বিল আনছেন মমতা
অসীমবাবু গানবাজনা করেন। সেই সূত্রে তাঁর একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে যার নাম ‘অসীম বাংলা’। সেই চ্যানেলেই অসীম বলেছেন, ‘২০২৪ সালের আগে যদি CAA লাগু না হয়, উদ্বাস্তুরা যদি মুক্তি না পান, বিজেপির জন্য একটা ভোটও চাইতে যেতে পারব না।’ তাঁর এহেন বার্তাতেই এখন বেশ চাপে পড়ে গিয়েছেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। অসীমের বার্তা শুনে এখন বঙ্গ বিজেপির অনেক নেতাই বলছেন, এত বড় কথা এখনই না বললে ভালো হতো। পঞ্চায়েত ভোটে এর প্রভাব পড়বে। সূত্রে জানা গিয়েছে অসীমবাবুর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে পারেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তবে এই ঘটনা নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তার জেরে অনেকেই মনে করছেন অসীমের বার্তার পিছনে শান্তনুর প্রচ্ছন্ন মদত আছে। শান্তনু নিজে যা বলতে চাননি সেটাই অসীমকে দিয়ে বলিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন বছরে দুইবার করে বাড়বে মাইনে, নির্দেশ রাজ্যের
অসীমের বার্তায় মতুয়াদের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে দেখে ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সদস্য শুকদেব মাইতি। তিনি জানিয়েছেন, ‘CAA লাগু হবেই। আইন পাস হয়ে গিয়েছে। সেটা অসীমবাবুও জানেন। সাধারণ মানুষও জানেন। তবে রাজ্যে বিরোধী সরকার থাকায় হয়তো সময় লাগবে।’ শুকদেববাবুর এই বক্তব্যকেই হাতিয়ার করে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূলও। তাঁদের তরফে নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘CAA কোনদিনই লাগু হবে না। এটা বিজেপির রাজনৈতিক চমক ছাড়া কিছু নয়। তাই বিজেপি বিধায়ক অসীমবাবুকে বলব, আপনি নিশ্চিত থাকুন, ২০২৪ সালে আপনাকে পদ্মফুলের জন্য ভোট চাইতে যেতে হবে না। আশা করব, আপনি আপনার কথা রাখতে পারবেন।’