সুব্রত রায় : শহর বর্ধমানে বহু ছোটো বড়ো বিরিয়ানির দোকান রয়েছে । শহরে যাতায়াতকারী মানুষজনের মধ্যে বিরিয়ানীর স্বাদ গ্ৰহণের প্রবনতাও বেড়েছে যথেষ্ট । বিভিন্ন স্বাদের বিরিয়ানির(Biriyani) জন্য ভিড় হয় দোকানে দোকানে । এবার শীতের আবহে নতুন বিরিয়ানির স্বাদ নিতে চলে আসতে পারেন বর্ধমান উৎসব ময়দানে আয়োজিত খাদ্য মেলায় । এখানকার স্টলের বিশেষত্ব রয়েছে । বিরিয়ানী তৈরি করছেন বর্ধমান(Bardhaman)কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দীরা । শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি । ‘উদয়ন'(Udayan) নামে একটি স্টল তৈরি হয়েছে মেলা মাঠে ।
সেই স্টল থেকেই সংশোধনাগারের বন্দিরা বিক্রি করছেন বিরিয়ানী ও চিকেন চাপ । বিরিয়ানি ১০০/- টাকা ও চিকেন চাপ বিক্রি হচ্ছে ৬০/- টাকা দামে। যথেষ্ট ভিড় বাড়ছে ওই স্টলে । খাবার জন্য যেমন তার সাথে দেখার জন্যও ভিড় হচ্ছে ওই স্টলে। জেলে থাকা বন্দিরা নিজের হাতে বিরিয়ানী তৈরি করে বিক্রি করছেন । রয়েছেন কারা(Jail) বিভাগের আধিকারিকরাও ।
চাহিদা সামাল দিতে তারাও হাত লাগাচ্ছেন ক্রেতাদের বিরিয়ানি বিক্রির জন্য । খাওয়া দাওয়ার পর বাহবাও জানাচ্ছেন সকলে অপূর্ব স্বাদের জন্য । সাজাপ্রাপ্ত বন্দীরা তাদের নতুন দক্ষতার নিদর্শন রাখলেন । বিভিন্ন কারনে অপরাধের সাথে যুক্ত হয়ে তারা বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন কারাগারে ।
কিন্তু তাদের নিজস্ব সত্ত্বার যাতে বিকাশ ঘটে তারজন্যই কারা দপ্তরের এই প্রয়াস । মেলার মাঠে রকমারি খাবারের দোকানের (Food Stall)মাঝেও বন্দিদের হাতে তৈরি বিরিয়ানী ও যথেষ্ট নজর কাড়ছে । খাবার পরিবেশন থেকে প্যাকেটজাত করে দেওয়া সবই করছেন জেল বন্দিরা । কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের জনাকয়েক বন্দীকে নিয়েই চলছে এই ” উদয়ন” স্টলটি ।সাদা পোশাক গায়ে চারজন বন্দি চালাচ্ছেন স্টলটি ।দেখলে বোঝাই যাবে না যে তাঁরা জেল বন্দি। রান্নার কাজে পারদর্শী যারা তাদের নিয়েই এই পদক্ষেপ নিয়েছে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ ।
শনিবার সন্ধ্যায় নবীনচন্দ্র সাহা দমদম(DumDum)রেঞ্জের ডিআইজি তিনি বর্ধমানের এই খাদ্য মেলায় যান। পরিদর্শন করেন এই উদয়ন স্টল। তারই নেওয়া উদ্যোগের সফল রূপায়ণ দেখার জন্য। তিনি বলেন, আমাদের শুধু খাবারের ব্যাপারটা নয় বন্দিদের জীবনে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য বিভিন্ন রকম উদ্যোগ গ্ৰহন করা হয়েছে ।তার মধ্যে এটা একটা ।এদেরকে মানুষের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার প্রধান কারণ সমাজে যাতে মূল স্রোতে ফিরতে পারে তার জন্যই একটা প্রচেষ্টা।সবার সঙ্গে এরা মিশবে কথা বলবে। এরা আর হতাশ হয়ে পরবে না এটাই মূল লক্ষ্য।