নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) মানুষের কাছে শাহি আবদার, ২৪-এ চাই ৩৫ আসন। কিন্তু বাংলার মাটিতে তাঁর দলের পায়ের তলার মাটি যে আর নেই সেই চরম সত্যিটাই তাঁকে কেউ জানাবার প্রয়োজনটুকুও করে না। কিন্তু অতি বড় সত্যিও কোনওদিন ধামাচাপা পড়ে থাকে না। এই এখন যেমন ঝুলি থেকে বেড়াল বেড়িয়ে পড়েছে। রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে(Panchayat Election) এমন কোনও জেলা নেই যেখানে পদ্মশিবির ১০০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। বিশেষ করে হাওড়া, বর্ধমান, বীরভূম, দুই ২৪ পরগনা, মালদা, মুর্শিদাবাদের মতো একাধিক জেলায় বিজেপির(BJP) সাংগঠনিক পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। যদিও দলের রাজ্য নেতৃত্ব সাফাই দিচ্ছে যে, মূলত সংখ্যালঘু প্রভাবিত বলেই কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু পরিস্থিতি যে খুব একট ভাল নয়, সেটা এখন বিলক্ষণ বুঝে গিয়েছেন দলেরই কেন্দ্রীয় নেতারা।
আরও পড়ুন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে প্রথম ফুসফুস প্রতিস্থাপন মমতার বাংলায়
রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং বঙ্গ বিজেপির তরফে প্রাপ্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের(North Bengal) আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় ৯০ শতাংশের বেশি আসনেই প্রার্থী দিতে পেরেছে গেরুয়া শিবির। দক্ষিণ দিনাজপুর এবং কোচবিহার জেলাতেও ৮০ শতাংশের বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়া গিয়েছে। কিন্তু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদা ও উত্তর দিনাজপুরে কমবেশি ৫০ শতাংশ আসনে প্রার্থী পেয়েছে পদ্মশিবির। আবার জঙ্গলমহলের(Junglemahal) বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়ায় ৭০ শতাংশেরও বেশি আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। এছাড়া দুই মেদিনীপুরেও পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো। কিন্তু শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গ এবং জঙ্গলমহলের সংগঠনের ওপর ভরসা করে যে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করা যাবে না, তা বিলক্ষণ জানেন দলের শীর্ষ কেন্দ্রীয় নেতারা। তবুও বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব এখন ১০০ শতাংশ আসনে প্রার্থী দিতে না পারার ব্যর্থতাকে ঢাকতে ৭০ কিংবা ৮০ শতাংশের বেশি আসনে প্রার্থী দেওয়ার পরিসংখ্যানকে ফলাও করে দেখাতে চাইছে।
আরও পড়ুন গোঁজ কাঁটায় অস্থির বিজেপি, মাথায় হাত নেতৃত্বের
কিন্তু ভবি ভোলার নয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখন দেখতে চাইছে কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিবেষ্টিত পদ্ম নেতারা বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে কোন সাফল্য তুলে ধরতে পারে। বিশেষ করে আলিপুরদুয়ার ও পুরুলিয়ার জেলা পরিষদ বিজেপি দখল করতে পারে কিনা, দলের বিধায়কেরা যে সব এলাকা থেকে জিতে এসেছেন সেই সব এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি দখল করতে পারে কিনা। কার্যত সেই লড়াইয়েই বোঝা যাবে ২৪-এ বাংলার বুকে ঠিক কী হতে চলেছে। যদিও পদ্মশিবিরের অভিজ্ঞ কিছু নেতার দাবি, জেলা পরিষদ দখলের কোনও অবস্থাতেই নেই বিজেপি। ১০-১২টি পঞ্চায়েত সমিতিতে তাঁরা জয়ের মুখ দেখতে পারে, কিন্তু সেখানে শেষ পর্যন্ত তাঁরা বোর্ড গড়তে পারবে কিনা সন্দেহ। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে দলের যারা জিতবে তাঁরাও কতদিন বিজেপিতে থাকবে সেটা আরও বড় সন্দেহ। কেননা সবাই বুঝে গিয়েছে বাংলায় কোনও পরিবর্তন ঘটানোর ক্ষমতা এই বিজেপির নেই। বাংলার মানুষ কোনও পরিবর্তন চানও না।