এই মুহূর্তে




নিম্নচাপের বৃষ্টিতে বন্যার ভ্রুকুটি দক্ষিনবঙ্গের বুকে




নিজস্ব প্রতিনিধি: মায়ানমার উপকূলে জন্ম নেওয়া ঘূর্ণাবর্ত বাংলার বুকে পা রেখেছে সুগভীর নিম্নচাপ হয়ে। সেই নিম্নচাপের ধাক্কায় মঙ্গলবার থেকেই ভিজতে শুরু করেছিল বাংলা। সঙ্গে ছিল ঝোড়ো হাওয়ায়। বুধবার পর্যন্ত একনাগাড়ের বৃষ্টি তাই বাংলার বুকে পুজোর মুখে আরও একবার বানভাসির পরিস্থিতি তৈরি করে দিয়েছে। কেননা আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এই নিম্নচাপের দরুন কোনও কোনও জেলায় ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত যেমন বৃষ্টি হয়েছে তেমনি এদিনও বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পশ্চিম বর্ধমান জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে। আর এই বৃষ্টির হাত ধরেই জল বাড়তে শুরু করেছে দামোদর, দ্বারকেশ্বর, শীলাবতী, কংসাবতী নদীতে। ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকালই ওই নিম্নচাপ বাংলা অতিক্রম করে ঝাড়খণ্ডে চলে গিয়েছে। এদিন সেখানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত ঘটাবে। তার জেরে ডিভিসির একাধিক জলাধার থেকে এদিন থেকেই জল ছাড়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সেই জল নীচের দিকে নেমে বেশ কিছু এলাকা নতুন করে প্লাবিত করতে পারে।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, নিম্নচাপের হাত ধরে বাংলায় গত কয়েকদিন ধরেই যে বৃষ্টি চলছে তার জেরে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নীচু এলাকায় জল জমেছে। গড়বেতা রাজ্য সড়কের ওপর জল উঠেছে। সেখানে আমজনতা কার্যত বিপদের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করছেন। জল জমতে শুরু করে দিয়েছে বাঁকুড়া শহরের পাশাপাশি জয়পুর কোতলপুর এলাকাতেও। হুগলির আরামবাগ, খানাকুল, পুড়শুড়া ও গোঘাটের অবস্থাও এখন খুব একটা ভালো নয়। রূপনারায়ণের ভাঙ্গা নদী বাঁধগুলি দিয়ে জল ঢুকছে খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকায়। খানাকুল-২ ব্লকের ১১ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের শতাধিক গ্রাম এখনও জলের তলায়। বেশ কিছু এলাকায় দুর্গতরা ছাদে ত্রিপল টানিয়ে জীবন যাপন করছেন। রাত থেকে বৃষ্টিতে সেই সমস্ত বন্যাদুর্গতদের অবস্থা আরও করুণ হয়ে উঠেছে। যদি ডিভিসি আবারও জল ছাড়ে তাহলে আবারও ভাসবে খানাকুল। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের পরিস্থিতিও সঙ্কটজনক। ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আবারও সেখানে জল বাড়তে শুরু করেছে নানা এলাকায়।

এদিকে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গল-বুধবারের জোরালো বর্ষণে রাজ্যের অনেক জায়গায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৮ হাজার বাড়ি। ১৫০টি ত্রাণ শিবিরে ২৬ হাজার মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। কোনও কোনও জেলায় ২০০ মিলিমিটারেরও বেশি বৃষ্টি হয়েছে। বহু জায়গায় জল জমেছে। কোথাও কোথাও সাবস্টেশন, ট্রান্সফর্মার, মিটার জলের তলায় ডুবেছে। সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হয়েছে। পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, বীরভূম, হুগলি, বিধাননগরে গাছ পড়ে তার ছিঁড়েছে। বিদ্যুতের ৪৮২টি খুঁটি ভেঙে গিয়েছে। এদিকে আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বার বঙ্গোপসাগরে অনেক বেশি নিম্নচাপ ও ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। তাদের দাপটে উদ্বৃত্ত বর্ষণ হয়েছে গাঙ্গেয় বঙ্গে। মৌসম ভবনের হিসেব, ১ জুন থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গাঙ্গেয় বঙ্গে স্বাভাবিকের থেকে ২৬% বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এই অতিবর্ষণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে অনেক জায়গায়।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

ব্যবসায়ীকে উপদেশ দিয়ে নগদ টাকা ও গয়না নিয়ে পালাল পোশাক পরা ‘পুলিশ’

রবিতে দুঃসংবাদ, দক্ষিণবঙ্গের ৭ জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস

ব্যারাকপুরে তৃণমূল কাউন্সিলরের দাদা সহ ৪ কুখ্যাত দুষ্কৃতী পুলিশের জালে

ভরা দামোদরের জলে স্নান করতে নেমে তলিয়ে মৃত্যু মামা – ভাগ্নের

বাঁকুড়ায় স্ত্রীকে পুড়িয়ে খুন করায় নাবালক ছেলের সাক্ষ্যে যাবজ্জীবন সাজা প্রাক্তন সেনা কর্মীর

পরিযায়ী শ্রমিকদের হয়ে মুখ খুললেন কোচবিহারের তৃণমূল মুখপাত্র

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ