নিজস্ব প্রতিনিধি: সব কিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে রাজ্যের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন(Panchayat Election) যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি কিন্তু এখন থেকেই বেশ উত্তপ্ত হতে শুরু করে দিয়েছে। কেননা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই এই পঞ্চায়েত নির্বাচন কার্যত সেমিফাইনাল হয়ে উঠতে চলেছে রাজ্য রাজনীতিতে। স্বাভাবিক ভাবেই এই নির্বাচনে ভাল ফল করে সব রাজনৈতিক দলই চাইবে ভোটের ময়দানে কিছুটা এগিয়ে থেকে দৌড় শুরু করার, কিছুটা বাড়তি অক্সিজেন সংগ্রহ করে রাখার। এই অবস্থায় বাংলার(Bengal) ২৪২১টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে(Gram Panchayat) ২৫০ কোটি টাকা পুরস্কার দিতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন মা-মাটি-মানুষের সরকার ও বিশ্বব্যাঙ্ক(World Bank)। ওই টাকায় এই পঞ্চায়েতগুলি আরও উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারবে। পাশাপাশি এই পঞ্চায়েতগুলি যারা চালান তাঁরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই অনুদান পেলে, আরও ভাল কাজ করে দেখাবার ইচ্ছা নিয়ে ভোটের ময়দানে মাঠে নামবেন। তাঁদের মনোবল আরও চাঙ্গা হবে।
আরও পড়ুন এবার মমতার সরকারও আনছে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প
জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পঞ্চায়েতগুলি কেমন কাজ করছে তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের নিযুক্ত একটি এজেন্সিকে দিয়ে গতবছর একটি সমীক্ষা করানো হয়। পঞ্চায়েতগুলি তাদের যাবতীয় খরচের হিসেব অনলাইন পোর্টালে আপলোড করেছে কি না, বিভিন্ন কাজের জিও ট্যাগিং ঠিকমতো করা হয়েছে কি না ইত্যাদি বিষয় এতে খতিয়ে দেখা হয়। এছাড়া গত তিনবছরের আয়কর দাখিল সংক্রান্ত নথিও পরীক্ষা করেন আধিকারিরকরা। এই মূল্যায়নের ওপরই প্রত্যেক গ্রাম পঞ্চায়েতকে নম্বর দেওয়া হয়। রাজ্যের ৩,২২৭টি পঞ্চায়েতেই চলে এই কাজ। ফলাফল বেরনোর পর দেখা গিয়েছে, ৭৫ শতাংশ পঞ্চায়েত উত্তীর্ণ হয়েছে। কাজের মূল্যায়নে উত্তীর্ণ হয়েছে রাজ্যের ২৪২১টি গ্রাম পঞ্চায়েত। তাদের পুরস্কৃত করতেই এবার দেওয়া হবে আর্থিক অনুদান। রাজ্য অর্থ কমিশন এবং বিশ্ব ব্যাঙ্ক যৌথভাবে এই টাকা দেবে। এর মধ্যে রাজ্যের কোষাগার থেকে যাচ্ছে ১৪০.৩৫ কোটি টাকা ও বিশ্বব্যাঙ্ক দিচ্ছে ১১০.২৫ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এই খাতে অনুমোদিত হয়েছে ২৫০.৬০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন মমতার বাংলার ‘লাখপতি দিদি’রা টেক্কা দিল ‘ডবল ইঞ্জিন’দের
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সবচেয়ে বেশি গ্রাম পঞ্চায়েত উত্তীর্ণ হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে। রাজ্যের এই সব উত্তীর্ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের আলাদা অ্যাকউন্টে এই অর্থ ঢুকবে। তবে এই টাকা ফেলে রাখা যাবে না। যেসব কাজের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তার বাইরেও খরচ করা যাবে না। তাই রাজ্যের প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি দেখারও পরামর্শ দিয়েছে নবান্ন। একই সঙ্গে যে সব গ্রাম পঞ্চায়েত এই সমীক্ষায় সফল ভাবে উত্তীর্ণ হতে পারেনি তাঁদের খামতি কোথায় সেটাও দেখার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।