নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোটের মাঠে হারানো যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে(Mamata Banerjee)। দখল করা যায়নি বাংলার মসনদও। সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে নেমেও দৌড় থেমেছে ৭৭ আসনে। আর সেই হারের জ্বালা জুড়াতেই বাংলার(Bengal) জনতাকে ভাতে মারার ফন্দি এঁটেছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকার। আর সেই সূত্রেই একের পর এক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে বাংলার জন্য। তার মধ্যে অন্যতম হল ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের(100 Days Work Project) খরচা ও মজুরি বাবদ কেন্দ্র সরকার বাংলার প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে। এবার সামনে এল আরও এক বিস্ফোরক তথ্য। সম্প্রতি দিল্লিতে রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে কেন্দ্রের আধিকারিকদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই রাজ্যের তরফে রীতিমত পরিসংখ্যান ও তথ্য সম্বলিত রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয় মোদি সরকারের আধিকারিকদের হাতে। আর সেই রিপোর্টেই দাবি করা হয়েছে টানা দু’টি অর্থবর্ষে বাংলাকে কোনও কর্মদিবসই বরাদ্দ করেনি মোদি সরকার। সেই কর্মদিবস দেওয়া হলে রাজ্য কেন্দ্রের কাছ থেকে পেত ২৩ হাজার কোটি টাকা(23 Thousand Crore Rupees)।
রাজ্যের তরফে কেন্দ্রের কাছে সোজাসুজি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে গ্রামবাংলার লক্ষ লক্ষ গরিব মানুষকে বঞ্চিত করা হয়েছে বেশ সুপরিকল্পিত ভাবেই। চেষ্টা হয়েছে বাংলার মানুষকে ভাতে মারার, কেননা তাঁরা একুশের নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট না দিয়ে তৃণমূলকে ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের তরফে বার বার অভিযোগ করা হচ্ছে ১০০ দিনের কাজে বাংলার প্রাপ্য বাংলার প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ২৩ হাজার কোটির বঞ্চনা। কীভাবে এই হিসাব এল? নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে বাংলায় প্রায় ৬২ কোটি শ্রমদিবস তৈরির প্রস্তাব ছিল। সেই হিসেবে এই খাতে রাজ্য প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা পেত। কিন্তু কর্মদিবসেই কোপ পড়ে যাওয়ায় বিপুল বরাদ্দ থেকেও বঞ্চিত হতে হয়েছে রাজ্যবাসীকে। ধাক্কা খেয়েছে গ্রামীণ উন্নয়ন।
ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিয়েছেন বাংলার যে ২১ লক্ষ মানুষ ১০০ দিনের কাজ করেও মজুরি পাননি তাঁদের ২১ ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকার তাঁদের মজুরি দিয়ে দেবে। ওইদিন ওই ২১ লক্ষ মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তাঁদের প্রাপ্য মজুরির টাকা পাঠিয়ে দেবে রাজ্য সরকার। এর জন্য ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের রাজ্য বাজেটে ৪ হাজার কোটি টাকার সংস্থান করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বাংলার যে সব মানুষেরা আবাস প্রকল্পে নাম থাকা সত্ত্বেও প্রকল্পের টাকা পাননি সেই ১১ লক্ষ মানুষের কাছে তাঁদের প্রাপ্র্য ৬৬০০ কোটি টাকাও ধাপে ধাপে দিয়ে দেবে রাজ্য সরকার। আর মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষনাই গ্রাম বাংলায় বিজেপিকে চূড়ান্ত ভাবে কোনঠাসা করে দিয়েছে। কার্যত মুখ পুড়ছে পদ্মশিবিরের। যদিও তারপরেও বঙ্গ বিজেপির নেতারা লাগাতার দিল্লিতে গিয়ে তদ্বির করছেন যাতে বাংলার প্রাপ্য টাকা কেন্দ্র সরকার আটকে রাখে। তাঁরা আবার সেই সব কথা বুক ঠুকে প্রকাশ্যে বলেও বেড়াচ্ছেন। এটাই বিজেপি।
