নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দশমীর বিষাদ যখন সর্বত্র তখন উত্তরবঙ্গের নানা জায়গায় নবদূর্গা বা ভান্ডানি পূজায় মেতে ওঠেন অনেকে। বিশেষত উত্তরের বৃহত্তম জনগোষ্ঠী মূলত রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ এই পুজো করে থাকেন। দশমীর পরেই তাঁরা মেতে ওঠেন ভান্ডানি পুজোয়। তেমনই ধূপগুড়ি পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডেও প্রতিবছরের মত এবারও ভান্ডানি পূজোর আয়োজন করা হয়েছে।
কোথাও দশমীর পরেরদিন একাদশী তিথিতে আবার কোথাও দ্বাদশী তিথিতে এই পুজোর আয়োজন করা হয়। কোথাও এই পূজা নবদূর্গা আবার কোথাও ভান্ডানি বা ভান্ডারি নামে পরিচিত। দেবী দুর্গার মতই দেবী কোথাও দশভূজা, কোথাও চতুর্ভূজা। তবে দেবীর সঙ্গে অসুর নেই। দেবী বাঘের ওপর অধিষ্ঠিতা। দেবী দুর্গার মত ভান্ডানি দেবীর সঙ্গে থাকেন লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ।
ভান্ডানী পূজা শতাধিক বছরের পুরনো। ৬২ বছর বয়সী সটিছ চন্দ্র রায় জানান, “এই পুজো ৯৯ বছরে পদার্পণ করল। আগে পারিবারিক ছিল। এখন এই পুজোয় সবাই অংশ নেন।শুধুমাত্র রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ না উত্তরের বিভিন্ন জনজাতির মানুষ অংশগ্রহণ করে। পুজো উপলক্ষে আগামী ২দিন ধরে মেলা এবং অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে’।
উল্লেখ্য, রাজবংশী সমাজে কথিত রয়েছে, দশমীতে বিসর্জনের পর বাপেরবাড়ি থেকে উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলের মধ্য দিয়ে গ্ৰাম্য বধূ রুপে কৈলাসে ফিরছিলেন উমা। কিন্তু রাতের অন্ধকারে পথ হারিয়ে ফেলেন। পথভ্রষ্ট গ্ৰাম্যবধূর কান্নার শব্দ শুনে ছুটে আসেন রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ।তাঁরা বধূকে তাঁদের গ্ৰামে নিয়ে যায়। দেবী সেই রাত গ্ৰামে কাটিয়ে একাদশীর দিন কৈলাসে ফিরে যান। গ্রামবাসীদের আতিথেয়তায় সন্তুষ্ট হয়ে ফিরে যাওয়ার আগে দেবী নিজের প্রকৃত পরিচয় দেন এবং গ্রাম বাংলার মানুষের শস্যের ভান্ডার সর্বদা পূর্ণ থাকার বর দিয়ে যান। সেই থেকেই এই পূজার সূচনা।