নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের ভোটে জেতার পরে পরেই কার্যত ডুমুরের ফুল হয়ে গিয়েছেন মালদা জেলার ইংরেজবাজার বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। দলের নেতা থেকে কর্মী সকল স্তরেই নানান সময়ে অভিযোগ ওঠে যে বিধায়ককে প্রয়োজনে পাওয়া যায় না। এমনকি দলের নেতা থেকে কর্মীরাও ফোন করলেও তিনি তা ধরেন না। একই অভিযোগ ইংরেজবাজার বিধানসভার মানুষেরও। সেই শ্রীরূপাই রবিবার নেমেছিলেন ইংরেজবাজার শহরের পথে। ‘আপনার সমস্যা সমাধানে পাড়ায় বিধায়ক’ নামের এক কর্মসূচীকে সামনে রেখে শ্রীরূপা এদিন মাঠে নামেন। যদিও মূল লক্ষ্য ছিল পুরভোটের আগে দলের হয়ে প্রচার শুরু করে দেওয়া। কিন্তু দেখা গেল, শ্রীরূপার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে রইল ইংরেজবাজার শহরবাসী। শ্রীরূপার কর্মসূচী এদিন নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হলেও দেখা গেল চেয়ার-টেবিল সব ফাঁকাই পড়ে রইল। বিজেপির কিছু নেতা কর্মী ছাড়া আর কাউকেই সেখানে দেখা গেল না, বিশেষ করে সাধারণ মানুষকে।
মালদা জেলার ১২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল জেলার ৮টি আসনে জয়ী হয়। এর আগে মালদা জেলায় তৃণমূল এইরকম সাফল্য পায়নি। কিন্তু সেই জয়ের মধ্যেও বিজেপির পকেটে চলে গিয়েছিল জেলার ৪টি আসন। তার মধ্যে ইংরেজবাজারও ছিল। বিধানসভা ভোটে জেতার কারনে বিজেপি এবার ইংরেজবাজার পুরসভা জেতার বিষয়েও বেশ আত্মবিশ্বাসী। সেই লক্ষ্যেই প্রচার শুরু করার জন্য বঙ্গ বিজেপির তরফে শ্রীরূপাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় কাজ শুরুর জন্য। সেই লক্ষ্যেই এদিন থেকে ‘আপনার সমস্যা সমাধানে পাড়ায় বিধায়ক’ কর্মসূচী শুরু করা হয়। এদিন শ্রীরূপা নিজেই জানিয়েছেন, ‘মানুষের সমস্যা সমাধানে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচি প্রতি সপ্তাহে লাগাতার ভাবে শহরজুড়ে চলবে।’ কিন্তু এদিন রাস্তায় নেমে কার্যত আমজনতার বিজেপি বিরোধী মনোভাব বেশ ভালই টের পান শ্রীরূপা নিজে। বার বার তাঁকে আমজনতার কাছে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় যে কেন তাঁকে প্রয়োজনে পাওয়া যায় না? কেন তিনি ইংরেজবাজারে না থেকে কলকাতায় থাকেন?
তবে এদিন সব থেকে বড় ধাক্কা এসেছে ‘আপনার সমস্যা সমাধানে পাড়ায় বিধায়ক’ কর্মসূচী চূড়ান্ত ফ্লপ হওয়ায়। কার্যত আমজনতার কাউকেই এই কর্মসূচীতে অংশ নিতে দেখা যায়নি। আর এখানেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে গেরুয়া শিবিরের নেতাদের। বিজেপির কর্মসূচী মুখ থুবড়ে পড়তেই বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ হানতে ছাড়ছে না রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মালদা জেলার মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, ‘নির্বাচনের পর থেকে এই বিধায়ককে দেখা যায়নি। মানুষের বিপদে আপদে থাকে না। বিধায়কের দায়িত্ব পালন করে না। তার দায়িত্ব আমাদের বিধায়কদের পালন করতে হয়। এখন যেহেতু সামনে পুরভোট রয়েছে তাই তার আগে এই চটকদারি শুরু করেছে। মানুষ কী এতই বোকা। তাই ফ্লপ হয়েছে কর্মসূচী।’