নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে অমিত শাহ শ্লোগান তুলেছিলেন ‘আব কে বার ২০০ পার’। কিন্তু অমিত শাহের সেই শ্লোগান মুখের কথাই হ্যে থেকে গিয়েছে। বাংলায় বিজেপির দৌড় ১০০’র অনেক নীচেই থেমে গিয়েছে। আর সেই পরাজয়ের ধাক্কায় এখন বঙ্গ বিজেপির সংগঠন ও দল দুই কার্যত ছিন্নভিন্ন দশার মুখে পড়েছে। প্রতিদিনই দল ছাড়ছেন হাজার হাজার কর্মী। দল ছাড়ছেন নেতারাও। এমনকি ভোটের প্রার্থীরাও রাতারাতি বিজেপি ছেড়ে দিচ্ছেন। ঠিক এই রকম অবস্থায় মালদা জেলার সদর শহর ইংরেজবাজারে দেখা গেল চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা। বিজেপির বিক্ষুব্ধ কর্মীরাই দেওয়ালে দেওয়ালে লিখে চলেছেন এক আবেদন, শহরের বাসিন্দারা যেন বিজেপিকে ভোট না দেন। ক্ষোভ কোন জায়গায় পৌঁছালে দলেরই বিরুদ্ধে দলের কর্মীরা প্রকাশ্যে এমন দেওয়াল লিখনে মন দেন সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ইংরেজবাজার পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দেওয়াল লিখন করছেন ওয়ার্ড কমিটির বিজেপি নেতাকর্মীরা। অন্য ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী দেওয়ায় এই অসন্তোষ। ভোটে এই অসন্তোষের প্রভাব পড়বে দাবি করেছেন বিজেপি প্রার্থীও। যদিও তাঁর দাবি, কয়েকজন তৃণমূলকর্মীর সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে মিলে এই কাণ্ড করছেন দলের কিছু কর্মী। ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি পার্থসারথী ঘোষও। তিনি সাফ জানিয়েছেন, এসব যারা করছে দল তাঁদের বহিষ্কারের পথে হাঁটবে। ঘটনার জেরে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী আবার জানিয়েছেন, ‘এটা বিজেপির নিজেদের মধ্যে কলহ। মালদা জেলায় বিজেপির কোন অস্তিত্ব নেই। রাজ্য সরকারের উন্নয়নের হাতিয়ার করে সমস্ত ওয়ার্ডের জয়লাভ করবে তৃণমূল কংগ্রেস।’
ইংরেজবাজার পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী করেছে রোহিত হালদারকে, যিনি ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। আর এই নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়েছে বিজেপির অন্দরে। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি নেতা কর্মীদের অভিযোগ তাঁরা যাদের প্রার্থী করার জন্য দাবি জানিয়েছিলেন তা জেলা কমিটি করেনি। তাই বহিরাগত বিজেপি প্রার্থীকে একটিও ভোট দেওয়া হবে না। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিজেপি প্রার্থীকে পরাজিত করা হবে। এই বিষয়ে দেওয়াল লিখনের মাধ্যমে তারা প্রচার আরম্ভ করেছেন বলে জানিয়েছেন। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিজেপি প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রচার চলছে। ঘটনার জেরে ওই ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী রোহিত হালদার জানিয়েছেন, তিনি বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত। সেই সূত্রে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। দল তাঁকে যোগ্য মনে করেছে তাই প্রার্থী করেছে। যারা বিরোধিতা করছেন কেন করছেন সেই বিষয়ে তিনি কিছু বলবেন না। তবে ভোটবাক্সে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন।