নিজস্ব প্রতিনিধি: হাতে গোনা আর কয়েক দিন। তারপরেই ঘোষিত হয়ে যাবে ২৪’র ভোটযুদ্ধের(General Election 2024) দিনক্ষণ। সেই যুদ্ধে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির(BJP) লক্ষ্য বাংলার(Bengal) মাটি থেকে ৩৫টি আসন জিতে নেওয়া। ৫ বছর আগে উনিশের লোকসভা ভোটে বিজেপি বাংলার মাটি থেকে পেয়েছিল ১৮টি আসন। সেটাই তাঁরা এবার দ্বিগুণ করতে চায়। কিন্তু চাই বললেই তো আর চলে আসবে না, সেই ৩৫টি আসন বার করতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য সরকারের যাবতীয় সব আর্থসামাজিক প্রকল্পের বিরুদ্ধে। এদিকে বাংলায় দলের হাল খুবই খারাপ। দলের আদি নেতাদের অর্ধেকের বেশিই বসে গিয়েছেন। নিত্যদিন দলের বহু নেতাকর্মী দল ছাড়ছেন। মাঝেমধ্যেই জার্সি বদলাচ্ছেন দলের সাংসদ ও বিধায়কেরাও। ভোটের মাঠে দলের হাতে থাকা আসন ছিনিয়ে নিচ্ছে তৃণমূল। ফ্লপ হচ্ছে শাহি সভা থেকে গীতাময় ব্রিগেড। এমনকি মুখ থুবড়ে পড়েছে গ্রাম চলো অভিযানও। অগত্যা দলের নেতাকর্মীদের ভোকাল টনিক দিতে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শেষেই আবার বাংলায় আসছেন অমিত শাহ(Amit Shah)। সঙ্গে জে পি নাড্ডা(J P Nadda)।
গত জানুয়ারি মাসের শেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বঙ্গ সফরের কর্মসূচি ছিল। তাঁর সঙ্গে আসার কথা ছিল নাড্ডারও। কিন্তু বিহারের রাজনীতিতে নাটকীয় পট পরিবর্তনের ফলে সেই কর্মসূচি বাতিল হয়ে গিয়েছিল। এবার বিজেপি সূত্রেই জানা যাচ্ছে, চলতি মাসের শেষেই কলকাতায় ফের আসতে পারেন শাহ। সঙ্গী হবেন নাড্ডাও। ওইসময় লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হোক অথবা না হোক, বাংলায় গিয়ে সরাসরিই নির্বাচনী প্রচার শুরুর পরিকল্পনা করেছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সেই সূত্রেই দুই নেতার একসঙ্গে আসা। সেই সঙ্গে থাকবে বঙ্গ বিজেপির রুদ্ধদ্বার সাংগঠনিক বৈঠক। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কানে ইতিমধ্যেই খবর পৌঁছেছে যে, গ্রামে গ্রামে জনসংযোগ বাড়াতে ‘গ্রাম চলো অভিযান’র যে ডাক দেওয়া হয়েছিল তা মুখ থুবড়ে পড়েছে বাংলার মাটিতে। কর্মসূচি চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। মূলর সক্রিয় কর্মীর অভাবেই সেই কর্মসূচী ব্যর্থ হয়েছে। গ্রাম বাংলার অর্ধেক জায়গাতেও পৌঁছাতে পারেনি পদ্মশিবির।
শুধু তাই নয়, কেন্দ্রের নানা প্রকল্পের প্রচারের জন্য বিশেষ রথ জেলায় জেলায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই রথও বাংলার প্রতিটি গ্রামে পৌঁছে দিতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলার পদ্মশিবিরের নেতাকর্মীরা। বেশিরভাগ সময়ই সেই সব রথ দলের জেলা পার্টি অফিসের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বঙ্গ বিজেপির বিক্ষুব্ধ নেতাদের একাংশের দাবি, গতবার লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বহু বুথে এগিয়ে ছিল। সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে এখন সেই সমস্ত বুথেও তাঁরা যেতে পারছে না। বাংলার বুকে একের পর এক জেলায় দলের সংগঠন কার্যত কোমায় চলে গিয়েছে। প্রতিটি কর্মসূচিতেই তাই দল মুখ থুবড়ে পড়ছে। দলের জেলা নেতৃত্বের তো বটেই রাজ্য নেতৃত্বেরও গ্রহণযোগ্যতা নেই। লোকসভা নির্বাচনের প্রচার করাও মুশকিল হবে ওই সব বুথ এলাকায়। লোকসভা ভোটের আগে সংগঠনের এমন অবস্থা দেখে কর্মী থেকে সমর্থক সবাই মনোবল হারিয়ে ফেলছে। নেতৃত্ব তাঁদের চাঙা করতে পারছে না। বহু কর্মী বাড়িতে বসে রয়েছে। তাঁদের সংগঠনের কাজে লাগানোর চেষ্টা করাও হচ্ছে না। রাজ্যের এক-তৃতীয়াংশ গ্রামেও বিজেপি নেতাকর্মীরা পৌঁছতে পারেনি। এই অবস্থায় যতই শাহ বা নাড্ডা আসুন না কেন লাভের লাভ কিছুই হবে না।