নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ জগদ্ধাত্রী পুজো(Jagadhatri Puja 2023)। নদিয়া(Nadia) জেলার সদর শহর কৃষ্ণনগরের(Krishnanagar) বুকে প্রতি বছর জাঁকজমক সহকারে এই পুজো করা হয়। কৃষ্ণনগর শহরের বুকে এই উৎসবের মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন বুড়িমা(Buri Maa)। কৃষ্ণনগরের বুকে বুড়িমার পুজো এবার ২৫১বছরে পা রাখল। তাই ধারে, ভারে, বাহারে, নয়া মাত্রা জুড়ছে পুজোয়। এদিন সকাল থেকেই সেখানে শুরু হয়ে গিয়েছে পুজো। যেহেতু এখানে ১ দিনে সপ্তমী, অষ্টমি ও নবমী তিথির পুজো হয় তাই, সারাদিন সারারাত এখানে ভিড় লেগে থাকে। গতকাল রাত থেকেই তাই বুড়িমাকে ১২ কেজি সোনায়(Gold Jewelry) গয়নায় সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সেই সঙ্গে মায়ের আশেপাশে কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনী করে দেওয়া হয়েছে। শহর কৃষ্ণনগরের দাবি, চাষাপাড়া বারোয়ারির বুড়িমা জাগ্রত। তাই পুজোর দিন মায়ের কাছে অঞ্জলি দিতে কাকভোর থেকে লাইন পড়ে। গতবছর পুজোর অঞ্জলিতে রেকর্ড ভিড় হয়েছিল। ভক্তদের ঢল সামাল দিতে পুলিস প্রশাসনকেও নাকের জলে চোখের জলে হতে হয়েছিল। এবারের ভিড় আরও বেশি হয়েছে বলেই এদিন দাবি করেছেন উদ্যোক্তারা।
বুড়িমাকে প্রতিবছর সাজিয়ে তোলা হয় সোনা ও রূপোর গয়নায়। সেই গয়না মানুষেরই দেওয়া। তাঁরা মায়ের কাছে মানত করেন ও সেই মানত পূর্ণ হলে তাঁরা মাকে গয়না দিয়ে যান। সেই সব গয়না দিয়েই প্রতিবছর মাকে সাজিয়ে তোলা হয়। গত বছর তিনি ৭ কেজি গয়নায় সেজেছিলেন। এবারে সেটাই বেড়ে হয়েছে ১২ কেজি। গয়নার এই পরিমাণ বুড়িমার পুজোর ইতিহাসে সর্বোচ্চ। পূর্বের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এবারের গয়নার পরিমাণ। মায়ের কপালজুড়ে বসানো হয়েছে সোনার টিপ, গায়ে ভর্তি নানারকমের হার। পুজোর আয়োজক বারোয়ারির সম্পাদক গৌতম ঘোষ জানিয়েছেন, এবছর লক্ষ মানুষের পাত পড়বে পুজো মণ্ডপে। কমপক্ষে ১ লক্ষ মানুষ যাতে ভোগ পান, তার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
গতবছর বুড়িমার বিসর্জন নিয়ে একটু সমস্যা হয়েছিল। তবে এবছর সেই সমস্যা আর যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে বারোয়ারি ও প্রশাসনের তরফ থেকে। পুজো উদ্যোক্তারা চাইছেন দিনের আলো যখন ফুটছে তখন মাকে বিসর্জন দিতে। অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভোরে। কেননা কৃষ্ণনগর শহরের রীতি অনুযায়ী ভাসানের প্রথম দিন সমস্ত প্রতিমার ভাসান হলে তবেই বুড়িমা পথে নামেন। তিনি ভক্তদের ভিড় পেরিয়ে প্রথমে রাজবাড়ি, তারপর কদমতলা ঘাটে যান। আগামিকাল বিকাল থেকেই শহরের ভাসান পর্ব শুরু হয়ে যাবে। তাই বৃহস্পতিবার ভোরেই বুড়িমায়ের বিসর্জ ন হবে বলে জানা গিয়েছে। আর সেই বিসর্জন নিয়েই এখন বেশ চাপে আছে শহরের পুলিশ প্রশাসন। কেননা বুড়িমার পুজো বহুবছর ধরে শহরবাসীর আবেগের অংশ। পুজোর আয়োজন থেকে ভাসান, সবেতেই শহরবাসীর স্পর্শকাতরতা ভিন্নমাত্রার। মায়ের ভাসানের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতেই পুলিসকে বাড়তি বেগ পেতে হয়। কারণ, হাজার হাজার মানুষ বুড়িমার ভাসানে বেরিয়ে পড়েন। লক্ষ পা হাঁটে দেবীর বিসর্জন যাত্রায়। ভাসানের দিন দেবীর দর্শনের জন্য রাতভোর রাজপথের দু’ধারে কাতারে কাতারে মানুষ এসে দাঁড়ান। আমজনতার এই উন্মাদনা সামাল দেওয়াই পুলিশ প্রশাসনের কাছে এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ।