এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

জনস্বার্থে জমি অধিগৃহীত হতে পারে বাংলায়, রায় হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিনিধি: সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের আন্দোলন বাংলার বুকে রাজনৈতিক ভাবে পরিবর্তন তো এনেইছে সেই সঙ্গে দেশের জমিকেন্দ্রিক আন্দোলনকেও অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে। মানুষ এখন তাঁর জমির অধিকার নিয়ে অনেক বেশি সচেতন হয়ে উঠেছেন। তাঁরা চট করে জমি আর নিজেদের জমি হারাতে চাইছেন না। ফলে যখনই কোথাও জমি অধিগ্রহণ সম্পর্কিত কথা শোনা যাচ্ছে তখনই সেখানে আন্দোলন গড়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থায় নদিয়া(Nadia) জেলার বেথুয়াডহরিতে(Bethuadohori) ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ নিয়ে দায়ের হওয়া মামলায় এক গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court)। আর সেই রায়ের জেরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আপত্তি থাকলেও বাংলার বুকে জনস্বার্থে জমি অধিগ্রহণের দরজা খুলে গেল। বাংলার অগ্নিকন্যা তথা সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের নেত্রী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) নেতৃত্বাধীন সরকার ও দল জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে সেই বিরোধিতা আর জনস্বার্থ সম্পর্কিত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের নেপথ্যে ছিল তৎকালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন সরকারের জমি অধিগ্রহণ নীতি। সিঙ্গুরে প্রায় ১০০০ একর জমি জনস্বার্থে অধিগ্রহণ করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। পরে তা ন্যানো গাড়ির কারখানা নির্মাণের জন্য টাটাদের হাতে মাত্র ১টাকা লিজের বিনিময়ে ৯৯৯ বছরের জন্য তুলে দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনার বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়িয়েছিল সিঙ্গুর। বাকিটা ইতিহাস। বাংলার বুকে জমি আন্দোলনকে আঁকড়ে ধরেই বামেদের হটিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই থেকে এখনও অবধি তিনি নিজে, তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকার ও দল কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে জমি কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান করছে। ২০১১ সালের পরে বাংলার বুকে কোথাও কোনও কৃষকের কাছ থেকে ১ একর জমিও কেউ কেড়ে নিতে পারেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জাগ্রত উপস্থিতির জন্য। কিন্তু পাশাপাশি বেশ কিছু জনস্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়ে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়াও ধাক্কা খেয়েছে। তার মধ্যেই ছিল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের সম্প্রসারণ। সেই নিয়েই মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে।

নদিয়া জেলার বেথুয়াডহরিতে থমকে রয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের প্রকল্প। কেননা সেখানে সমস্যা বেধেছে ক্ষতিপূরণ নিয়ে। জমিদাতারা সেখানে জমির জন্য এক এক জন এক একরকম দর হাঁকছেন। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ বা ন্যাশানাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইন্ডিয়া(NHAI) বা এনএইচএআই যে দর দিচ্ছে তা না পসন্দ হলেই জমিদাতারা আর জমি দিতে চাইছেন না। এই অবস্থায় জমিদাতাদের একাংশ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় জমির দাম ও তার ক্ষতিপূরণ নিয়ে। সেই মামলাতেই কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ রায় দিয়ে জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের আপত্তি থাকলেও জনস্বার্থে কেন্দ্র সরকার জমি অধিগ্রহণ করতে পারবে। তবে সেক্ষেত্রে ২০১৩ সালের কেন্দ্রীয় আইন মেনেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারির আগে জমি অধিগ্রহণ হয়ে থাকলে বা ক্ষতিপূরণের অঙ্কে আপত্তির যদি মীমাংসা না হয়ে থাকে, তাহলেও ২০১৩ সালের আইন মেনেই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশ, মামলাকারীকে ক্ষতিপূরণের জন্য আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করতে হবে। পরবর্তী ছ’মাসের মধ্যে জেলা শাসককে বিষয়টি শুনে নতুন আইন মেনে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। জমিদাতা অন্যান্যদেরও যদি এমন আপত্তি থাকে, তাদের সকলের ক্ষেত্রেই এই নির্দেশ প্রযোজ্য হবে বলেও জানিয়েছে আদালত।

মামলাকারীদের আইনজীবী অরিন্দম দাস জানিয়েছেন, নতুন আইনে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যাপারে দীর্ঘ টালবাহানা চলছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জনস্বার্থে জমি অধিগ্রহণে নতুন আইনে ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য অনেকেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। কয়েক হাজার মামলা ঝুলে রয়েছে। আদালতের এই নির্দেশ সেই মামলাগুলির সমাধানের রাস্তা খুলে গেল। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে আইনজীবী দীপঙ্কর দাসও জানিয়েছেন, জাতীয় সড়কের জন্য জমি নেওয়া হলে নতুন আইনে ক্ষতিপূরণ দিতে আপত্তি নেই। ফলে বেথুয়াডহরির সমস্যা খুব্ব দ্রুত মিটতে চলেছে এমনটাই বলা যেতে পারে। তবে এই রায়ের তাৎপর্য একদম আলাদা রাজনৈতিক মহলে। বস্তুত এই রায়ের সব থেকে গুরুত্ব হল যে বাংলায় ক্ষমতাসীন শাসক দল, তাঁর নেত্রী এবং সরকারের আপত্তি থাকলেও মোদি সরকার বাংলার বুকে যে কোনওদিন, যে কোনও জায়গায় যত খুশি জমি অধিগ্রহণ করতে পারে যে কোনও প্রকল্পের জন্য জনস্বার্থের জিগির তুলে।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

‘পরিসংখ্যানের লড়াই হোক, শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন’, মোদিকে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের

সন্দেশখালিকাণ্ডে রেখা পাত্রের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের

মোদিকে দেখে অনুপ্রাণিত, ভোটের ময়দানে ওড়িশার চাওয়ালা

‘সন্দেশখালির বেলুন আলপিন ফুটেছে, চক্রান্ত এখন জনসমক্ষে’, বিজেপিকে নিশানা অভিষেকের

প্রচারের শেষলগ্নে চণ্ডীপাঠের মন্ত্র বিকৃত করার অভিযোগে বিদ্ধ অসীম

বৃষ্টির জেরে  বীরভূমে বাতিল  জনসভা, ভার্চুয়ালি প্রচার অভিষেকের

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর