নিজস্ব প্রতিনিধি: গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন নিয়ে আর কোনও আইনি জটিলতা থাকল না। কলকাতা হাইকোর্ট শুক্রবার শর্ত সাপেক্ষে মেলা আয়োজন করার অনুমতি দিয়ে দিল। তবে মেলায় কোভিডবিধি ঠিক মতন মানা হচ্ছে কিনা তা লক্ষ্য রাখতে রাজ্যের মুখ্যসচিব, বিরোধী দলনেতা ও মানবাধিকার কমিশনের এক সদস্যকে নিয়ে একটি কমিটিও গড়ে দিয়েছে আদালত। এদিনের রায়ে বলে দেওয়া হয়েছে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করতে হবে কোভিডবিধি মেনেই। রাজ্য সরকার এই মেলায় কোভিড ঠেকাতে যে যে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা আদালতকে জানিয়েছিল সেই সব পদক্ষেপ মেনে চলতে হবে।
কোভিড আবহে এ বছরে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন চিকিৎসক অভিনন্দন মণ্ডল। বুধবার সেই মামলার প্রথম শুনানি হয়েছিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি কেসাং ডোমা ভুটিয়ার ডিভিশন বেঞ্চে। সেই সময়ে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী আদালতে জানান, গঙ্গাসাগর মেলায় প্রতি বছর ১৮-২০ লক্ষ মানুষ আসেন। ২০২১ সালে কোভিড পরিস্থিতিতেও ৮ লক্ষ পুণ্যার্থী এসেছিলেন। রাজ্য সরকারও এবছর মেলায় ৫ লক্ষ পূণ্যার্থী আসার কথা জানিয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্যে কোভিড ঠেকাতে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি জমায়েত করতে পারবে না বলে নির্দেশিকা কারি করেছে নবান্ন। সাগরমেলাও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। তা হলে কেন সেখানে ৫ লক্ষ মানুষের জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, সে প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীর আইনজীবী। এ প্রসঙ্গে মামলাকারীর আইনজীবী চারধাম যাত্রা নিয়ে উত্তরাখণ্ড হাই কোর্টের রায়ও তুলে ধরেন।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চেয়েছিল। জবাবে বৃহস্পতিবার এজি জানান, কোভিড বিধি মেনে গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যানিটাইজার, মাস্ক ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে সাগরমেলায়। থাকছে অ্যাম্বুল্যান্সও। এরপরেই এদিন শর্ত সাপেক্ষে মেলার আয়োজন করার অনুমতি দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে মেলায় কোভিডবিধি ঠিক মতন মেনে চলা হচ্ছে কিনা তা নিয়ে যাতে কড়া নজরদারি বজায় থাকে তার জন্য ৩ সদস্যের এক কমিটি গঠন করে দিয়েছে।