নিজস্ব প্রতিনিধি, নবদ্বীপ: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। একটি শেষ হতেই আরেকটির প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। দুর্গাপুজো, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো শেষ হতেই এবার রাস উৎসবের ঢাকেও কাঠি পড়ে গেল নবদ্বীপে। তবে করোনার জেরে এবার জৌলুস অনেকটাই কম। বিধি মেনেই শুক্রবার থেকে শুরু হল নবদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। তার আগে বৃহস্পতিবার রাতে নিয়ম মেনে রণকালী, বামাকালী সহ বেশ কিছু শাক্ত দেবীর পুজো হল। নদিয়ার নবদ্বীপে রাস পুজো উপলক্ষে বৈষ্ণব, শাক্ত ও শৈব মতের বিভিন্ন দেব-দেবীর পুজো হচ্ছে।
দুর্গাপুজোর মতো কালী ও জগদ্ধাত্রীপুজোয় অনেক জায়গায় রাত্রিকালীন কার্ফু শিথিল করেছিল স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু সূত্রের খবর, নবদ্বীপে রাস উৎসব উপলক্ষ্যে কোনও বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়নি এবারও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তবুও নবদ্বীপে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই পুজো আরম্ভ হয়েছে। নিয়ম মেনে নবদ্বীপের বিভিন্ন প্রতিমার পুজো চলছে। প্রশাসনের নির্দেশ মেনে বিভিন্ন পুজো কমিটি মণ্ডপ সাজিয়ে তুলেছে, পাশাপাশি সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাস পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে মূল উৎসব শুক্রবার থেকেই শুরু হল। যদিও এবার মন খারাপ নবদ্বীপবাসীর। কারণ গত বছরের মতো এবারও ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমার অত্যন্ত পুরোনো প্রথা নবমী এবং আড়ং এর শোভাযাত্রা করা যাবে না। রাসের বাজনাতেও পড়েছে বিধিনিষেধের কোপ। শহরের প্রাণকেন্দ্র পোড়ামাতলায় মহিষমর্দিনী পুজো দিয়ে এ দিন নবদ্বীপের রাস উৎসবের সূচনা হয়। জানা যায় প্রায় পৌনে তিনশো বছর আগে নবদ্বীপে শুরু হয়েছিল এই রাস উৎসব। নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আমলে তাঁরই পৃষ্ঠপোষকতায় শক্তিমূর্তি গড়ে সাড়ম্বর পুজো শুরু হয়। যদিও রাস মূলত বৈষ্ণবীয় উৎসব। কিন্তু নদিয়ার নবদ্বীপে বৈষ্ণব-শাক্ত-শৈব এই তিন ধারার ব্যতিক্রমী মিলন ঘটেছে।