নিজস্ব প্রতিনিধি,পাথরপ্রতিমা:সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপ এলাকার মানুষদের প্রতিনিয়ত বাঘ-কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে জীবন যাপন করতে হয়। জলে কুমির আর ডাঙ্গায় বাঘের আতঙ্ক সর্বদাই সুন্দরবনের দ্বীপ এলাকার মানুষদের মনের মধ্যে যেন অব্যাহত। দৈত্যাকার কুমির প্রায় সময় সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপ এলাকাগুলির খাঁড়িতে দেখা যায় । শনিবার বিকালে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমা ব্লকের বনশ্যামনগর এলাকায় এক ব্যক্তির পুকুরে কুমির (Cocodial)দেখতে পান গ্রামবাসীরা।
এরপর কুমিরের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। উদ্ধার করার জন্য গ্রামেরই মানুষজন খবর দেন বনবিভাগকে। খবর পেয়ে রামগঙ্গা রেঞ্জের(Ramganga Range) বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান । বেশ কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় রাতে বনকর্মীরা বাগে আনতে পারেন ওই দৈত্যাকার কুমিরটিকে। বেশ কয়েক ঘন্টা ধরে কুমির ও মানুষের যে লড়াই সেই লড়াই দেখতে পুকুরের পাড়ে ভিড় জমিয়েছিনেন হাজার হাজার মানুষজন । বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, কুমিরটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৫ ফুট ও ওজন প্রায় ৩০০ কেজি। বনকর্মীরা কুমিরটিকে উদ্ধারের পর পাথরপ্রতিমার ভগবতপুর কুমির প্রকল্পে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান ।
এ বিষয়ে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা বনবিভাগের আধিকারিক মিলনকান্তি মন্ডল জানান, পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গা রেঞ্জের বনশ্যামনগরে একটি গৃহস্থের বাড়িতে কুমির দেখতে পান গ্রামবাসীরা । এরপর গ্রামবাসীরা তড়িঘড়ি খবর দেন । সেই খবর আসা মাত্রই সময় নষ্ট না করে বনবিভাগের আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান । বেশ কয়েক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় অবশেষে কুমিরটিকে উদ্ধার করেন । ভগবতপুর কুমির প্রকল্পে থেকে কোনোভাবে এই কুমিরটি লোকালয়ে ঢুকে পড়েছিল। এছাড়াও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করার ক্ষেত্রে প্রায় সময় সুন্দরবনের বিভিন্ন নদীতে ও খালে বনদপ্তরের পক্ষ থেকে কুমির ছাড়া হয়।
সম্প্রতি অমাবস্যার কোটালের জেরে সুন্দরবনের(Sundarban) বিভিন্ন নদী গুলিতে জলস্ফীতি দেখা দিয়েছিল । তাই প্রাথমিক অনুমান এই জলস্ফীতির কারণেই ওই কুমিরটি লোকালয় ঢুকে পড়েছিল। বনআধিকারিক ও কর্মীরা নিরাপদে উদ্ধার করেছেন কুমিরটিকে । প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ভগবতপুর কুমির প্রকল্পে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য । পুরোপুরি সুস্থ করার পর কুমিরটিকে পুনরায় সুন্দরবনের নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে।