নিজস্ব প্রতিনিধি: দুইজনে সুরে সুর মিলিয়ে দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের(TMC) সঙ্গে জোট নিয়ে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু নূন্যতম ৭টি আসন বাংলায়(Bengal) ছাড়তে হবে কংগ্রেসের(INC) জন্য। সেই দাবির পরে পরেই একজনকে নির্বাসিত করা হয়েছে সুদূর দাক্ষিণাত্যে, যাতে তিনি জোট নিয়ে বাগড়া দিতে না পারেন। এবার অপরজনকেও বাইপাস করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সঙ্গে জোট(Alliance) নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিতে চলেছে কংগ্রেস হাইকম্যান্ড। সূত্রে খবর, INDIA জোটের পঞ্চম বৈঠকের আগেই বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে জোট নিয়ে মমতার সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন সোনিয়া গান্ধি(Sonia Gandhi), রাহুল গান্ধি(Rahul Gandhi), মল্লিকার্জুন খাড়গেরা(Mallikarjun Kharge)। আর সেখানে বিন্দ্যমাত্র গুরুত্ব পাচ্ছে না প্রদেশ কংগ্রেসের দাবিদাওয়া। বিন্দুমাত্র গুরুত্ব পাচ্ছেন না অধীররঞ্জন চৌধুরী বা দীপা দাসমুন্সিরা। কেননা বাংলার বিধানসভায় কংগ্রেস শূন্য।
কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনিয়া-রাহুলের এখন একমাত্র লক্ষ্য মোদির অপসারণ। আর সেই লক্ষ্যে তাঁরা দলের স্বার্থ্যত্যাগ করতেও প্রস্তুত। তাঁদের সঙ্গে একমত খাড়গে সহ দলের একটা বড় অংশই। আর সেই কারণেই তাঁরা চাইছেন জাতীয় স্বার্থেই INDIA জোটকে মজবুত করতে। তার জন্য আত্মত্যাগ করতেও প্রস্তুত কংগ্রেস। খোলা মন, বৃহৎ হৃদয় এবং মুখ বন্ধ রেখেই শরিকদের সঙ্গে আসন রফার আলোচনায় রাজী কংগ্রেস। জেদাজেদি নয়। চব্বিশে INDIA জোটের আসন বাড়ানোই লক্ষ্য। তাই সেটি কংগ্রেসের নিজের প্রতীকে, নাকি শরিকদের সেটা নিয়ে না ভাবাই ভালো।
তাই অহেতুক বেশি আসনের জেদ না ধরে জয় নিশ্চিত করাই লক্ষ্য হওয়া উচিত। শরিকদের ধরে রেখেই সেই কাজ করতে চায় কংগ্রেস। আর সেই কারণেই প্রদেশ নেতাদের দাবিদাওয়া কোনও গুরুত্বই পাচ্ছে না। সেই পথে হেঁটেই খুব শীঘ্রই মমতার সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনায় বসতে চলেছে কংগ্রেস। তাতে মমতা যদি কংগ্রেসকে ১টিও আসন না ছাড়তে চান তবুও সোনিয়া-রাহুলরা মমতার মতকেই মান্যতা দিতে চলেছেন। তারপর যদি মমতা কংগ্রেসকে বহরমপুর ও দক্ষিন মালদা ছাড়তে চান সেটা স্বাগতই জানানো হবে দলের তরফে।
একইসঙ্গে রাহুল গান্ধীর ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’য় তৃণমূলনেত্রীকেও আমন্ত্রণ জানাতে চলেছে কংগ্রেস। মোদি জমানায় দেশের নানা ক্ষেত্রে যে অন্যায় চলছে, তার বিরুদ্ধে গর্জে ওঠাই এই যাত্রার লক্ষ্য। আর সেই সূত্রেই এই যাত্রায় INDIA জোটের শরিকদেরও এই যাত্রায় ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঠিক হয়েছে, দেশের ১৪টি রাজ্যের ওপর দিয়ে ‘ভারত ন্যায় যাত্রা’ যাবে। যখন যে রাজ্যের ওপর দিয়ে যাবে তখন সেই রাজ্যের INDIA জোটের শরিকদেরও শামিল হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান হবে। সেক্ষেত্রে খুব স্বাভাবিকভাবে বাংলায় তৃণমূলকে আমন্ত্রণ জানান হবে। মজার কথা, এই যাত্রায় শরিক হতে বাংলায় তৃণমূলকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেও বামেদের ক্ষেত্রে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে এআইসিসির তরফে জানা গিয়েছে। কার্যত বার্তা পরিষ্কার, মমতা আগে, বাম পরে। মমতা আবশ্যিক, বাম না থাকলেও অসুবিধা নেই। বাম-বিজেপি বান্ধব প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের তা না পসন্দ হলেও কিছু করার নেই।