নিজস্ব প্রতিনিধি: সাধ্যের মধ্যে ইংরেজী মাধ্যমের স্কুলে বাংলার ছেলেমেয়েরা যাতে পড়াশোনা করতে পারে তার জন্য রাজ্য সরকার নানা জেলায় ইংরেজী মাধ্যমের সরকারি স্কুল খোলার কাজ করে চলেছে। মালদা(Malda) জেলাতেও এই পথে হেঁটে একটি রাজ্য সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসা(English Medium Madrasa) খোলা হয়। দ্রাসাটিতে ভর্তি শুরু হয় ২০১৮ সালে। প্রথমদিকে পড়ুয়ার সংখ্যা অত্যন্ত কম থাকলেও শিক্ষক শিক্ষিকাদের তৎপরতায় বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৮৫০ জনেরও বেশি। প্রি-প্রাইমারি থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার সুযোগ রয়েছে এখানে। প্রতি বছর একটি করে শ্রেণি বাড়ানো হচ্ছে। পরিকাঠামোর দিক দিয়েও অত্যন্ত সমৃদ্ধ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। এমনকী রয়েছে নিজস্ব অডিটোরিয়ামও। কিন্তু সেই মাদ্রাসাতেই কর্মরত চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক শিক্ষিকারা দীর্ঘ প্রায় ৭ মাস ধরে বেতন(Salary) পাচ্ছেন না। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে তাঁরা চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) কাছে অভিযোগ জানিয়ে সুয়ারাহা পেতে।
আরও পড়ুন ‘মোচা’ নিয়ে সতর্ক বাংলা, কামালের দাবিকে মান্যতা IMD’র
জানা গিয়েছে, মালদার এই রাজ্য সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসার চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রায় ৭ মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় চরম সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন। বর্তমানে এই ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসায় প্রধান শিক্ষক সহ শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন ২০ জন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনই চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত হয়েছেন। এছাড়াও প্রাথমিক স্কুল থেকে ডেপুটেশনে ৩ জন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন থেকে ৪ জন এবং ১জন অতিথি শিক্ষক রয়েছেন। চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকদের বেতন হয় রাজ্য মাদ্রাসা ডিরেক্টরেট থেকে। একজন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকের মাসিক বেতন ১০ হাজার টাকা হলেও যে সংস্থার মাধ্যমে তাঁরা নিযুক্ত হয়েছিলেন সেই বেসরকারি সংস্থাটি ১৫০০ টাকা কেটে নেয় চুক্তি অনুযায়ী। ফলে একজন চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক মাসের শেষে হাতে পান মাত্র ৮৫০০ টাকা। কিন্তু গত সাত মাস ধরে সেই বেতনও মিলছে না। তার জেরে কয়েকদিন আগে তাঁরা ক্লাস বয়কটেরও সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। তাঁদের বেতন না পাওয়ার অভিযোগের যে সত্যতা রয়েছে, তা স্বীকার করেছেন ওই ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ও স্থায়ী শিক্ষক শিক্ষিকারাও।
আরও পড়ুন একুশের জয়ের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে মানুষকে অভিনন্দন অগ্নিকন্যার
এই সরকারি ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসার সব চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক শিক্ষিকারই স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। কারও রয়েছে বিএড ডিগ্রিও। ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আফরোজ্জামান হক বলেন, একথা ঠিকই চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক শিক্ষিকারা দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না। সম্প্রতি তাঁরা আন্দোলন করছেন। কর্মবিরতিও করেছেন। ফলে বাকি শিক্ষক শিক্ষিকাদের অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছি। যেহেতু আগামী বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদা জেলা সফরে যাচ্ছেন তাই ওই মাদ্রাসার চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাঁর সঙ্গে দেখা করে অভিযোগ জানাতে চাইছেন যাতে তিনি এই সমস্যার সমাধান করেন।