32ºc, Haze
Sunday, 2nd April, 2023 5:10 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: এক দশকেরও আগে বাংলার বুকে অবসান ঘটেছে বাম জমানার। কিন্তু এখনও দুর্নীতির বাইরে পা রাখতে পারেননি লাল ঝান্ডার নেতারা। এর জলজ্যান্ত প্রমাণ পুরুলিয়া(Purulia) জেলার সদর মহকুমার মাগুড়িয়া(Maguria Village) গ্রামের এক সিপিএম(CPIM) নেতা। নাম তাঁর সুনীল সহিস। তিনি পুরুলিয়া-১ ব্লকের সোনাইজুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে(Sonaijuri GP) প্রধান। তিনি নিজে বাড়িতে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা দিয়ে টাইলস বসানো কমিউনিটি টয়লেট(Community Toilet) বানিয়েছেন। পুরো টাকাটাই সরকারি টাকা। কিন্তু যে টয়লেট গ্রামবাসীদের জন্য বানানো হয়েছিল সেই টয়লেটের ধারেকাছে এখন ঘেঁষতে পারেন না গ্রামবাসীরা। বরঞ্চ সেই টয়লেট ব্যবহার করেন ওই সিপিএম নেতার বাড়ির লোকেরাই। অন্তত এমনটাই অভিযোগ উঠেছে ওই নেতার বিরুদ্ধে। অর্থাৎ নিজেদের ব্যবহার করার জন্য সরকারি অর্থে ঝাঁ চকচকে শৌচাগার বানিয়ে নিয়েছেন ওই সিপিএম নেতা। তার থেকেও মজার কথা, এই ঘটনায় টুঁ শব্দটিও করেনি পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্যরা। কেননা ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড হাতে হাত মিলিয়ে জোট গড়ে চালাচ্ছে বাম আর বিজেপি। মানে রাম-বামের জোট।
আরও পড়ুন বীরবাহা সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যের জন্য শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের
সুনীল এই কমিউনিটি টয়লেট গড়তে গিয়ে বেশ চালাকির আশ্রয় নিয়েছেন। নিজের বাড়ির সামান্য জমি সরকারের নামে করে সেখানেই ওই কমিউনিটি টয়লেট বানিয়ে নিয়েছেন। ফলে সরাসরি এটা কেউ বলতে পারছে না যে নিজ জমিতে ওই টয়লেট সুনীল বানিয়েছেন এই উদ্দেশ্য নিয়ে যাতে তিনি আর তাঁর বাড়ির লোকেরা ছাড়া আর কেউ ব্যবহার করতে না পারে। কিন্তু বাস্তব সেটাই। যে জায়গায় গ্রামবাসীদের জন্য ওই কমিউনিটি টয়লেট বানানো হয়েছে সেটি মূল রাস্তা থেকে বেশ কিছুটা ভেতরে। সরু গলি দিয়ে পায়ে হেঁটে সেখানে যেতে হয়। কিন্তু গ্রামপ্রধানের বাড়ির উঠোনে থাকা ওই টয়লেট ব্যবহার করার সাহস কারোর নেই। তাই অঘোষিত ভাবে ওই টয়লেট শুধুমাত্র সুনীলের বাড়ির লোকেরাই ব্যবহার করেন। আর কেউ সেখানে পাও রাখতে পারে না। ২০১৯-’২০অর্থবর্ষে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের টাকায় ওই ঝাঁ চকচকে কমিউনিটি টয়লেট নির্মাণ হয়েছে, অথচ সেখানে অঘোষিতভাবেই কমিউনিটির ‘ক’টুকুও পা রাখতে পারে না।
আরও পড়ুন আইন হাতে তুলে নিলেই কড়া পদক্ষেপ, বার্তা ফিরহাদের
যদিও এই ঘটনাকে দুর্নীতি বলতে মানতে নারাজ সুনীল। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে টাকা এসেছিল। দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণ না করলে টাকা ফেরত চলে যেত। গ্রামে কোনও কমিউনিটি টয়লেট ছিল না। তাই প্রকল্প রূপায়ণের জোর দেন তিনি। কিন্তু গ্রামের কেউ জমি দিতে চাননি এই প্রকল্পের জন্য। তাই তিনি নিজে বাধ্য হন তাঁর বাড়ির উঠোনের কিছুটা এই প্রকল্পের জন্য ছেড়ে দিতে। সেই জমি তিনি সরকারের নামে করে দেওয়ার পর তাতে ওই টয়লেট তৈরি করা হয়। আর তিনি কাউকে এই টয়লেট ব্যবহার না করার কোনও নির্দেশ দেননি। গ্রামের লোকেরাই প্রকৃতির বুকে হাওয়া খেতে খেতে প্রাত্যকৃত করতে পছন্দ করেন। তাই তাঁরা নিজেরাই এই টয়লেটে আসেন না।