নিজস্ব প্রতিনিধি: গরুপাচার ও এসএসসি বিতর্ক নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। এই দুই ঘটনায় দুই অভিযুক্ত রাজ্যের শাসক দলের দুই হেভিওয়েট নেতা। একজন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অন্যজন অনুব্রত মণ্ডল। প্রথমজন আছেন জেল হেফাজতে, আর দ্বিতীয়জন সিবিআই হেফাজতে। অস্বীকার করার উপায় নেই যে এই দুই হেভিওয়েট নেতার এহেন পরিণতিতে বেশ অস্বস্তি ছড়িয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) অন্দরে। সেই অস্বস্তি আরও বেড়ে গেল দলেরই এক ওজনদার নেতার বিরুদ্ধে কাটমানির(Cut Money) অভিযোগ ওঠায়। অভিযোগ, তিনি নাকি কাটমানি নিয়ে কারখানায় শ্রমিক নিয়োগের ব্যবস্থা করে দিচ্ছিলেন। তাঁকে কাটমানি না দিয়ে কেউই নাকি একটি নির্দিষ্ট কারখানায় শ্রমিকের কাজ পায়নি। কাটমানি দিয়ে তবেই মিলেছে শ্রমিকের কাজ। আর এই অভিযোগকে ঘিরে এখন নয়া বিতর্ক মাথাচাড়া দিল মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) জেলা তথা রাজ্য রাজনীতিতে।
অভিযোগ উঠেছে, মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর(Jangipur) মহকুমার রঘুনাথগঞ্জ-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি গৌতম ঘোষ(Goutam Ghosh) নাকি একটি কারখানায় শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে কাটমানি নিতেন। রঘুনাথগঞ্জের(Raghunathganj) মির্জাপুর দক্ষিণপাড়া এলাকায় একটি বেসরকারি সিমেন্ট কারখানা রয়েছে। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই কাজ করেন। এখন অভিযোগ উঠেছে, ওই সব বাসিন্দারা কাজ পেয়েছেন গৌতম ঘোষকে কাটমানি দিয়ে। যারা সেই কাটমানি দেননি তাঁরা কাজ করতে চেয়েও সেখানে শ্রমিকের কাজ পাননি। শুধু তাই নয়, অভিযোগ ওই কারখানায় আগে থেকেই যে সব বাসিন্দারা কাজ করতেন কিন্তু গৌতমকে কাটমানি দিতে চাননি তাঁদের নানা অভিযোগে কারখানা কর্তৃপক্ষ কাজ থেকে বসিয়ে দিয়েছে আর সেই জায়গায় কাটমানি নিয়ে বাইরের লোকেদের কাজের সুযোগ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা এতদিন ধামাচাপা পড়েই ছিল। কিন্তু শনিবার কাজ হারানো শ্রমিকেরা ওই সিমেন্ট কারখানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতেই গোটা ঘটনা সামনে চলে আসে। আর তার জেরে অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে তৃণমূলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব।
এই ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই জোরদার দাবি উঠেছে, দ্রুত গৌতমকে দলের ব্লক সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য। নাহলে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ যে দলের বিরুদ্ধে যেতে পারে এমন কথাটাও দলের জেলা নেতৃত্বের কানে উঠে গিয়েছে। আন্দোলনে নামা কাজ হারানো শ্রমিকেরা রীতিমত হুমকি দিয়ে দিয়েছেন গৌতমের অত্যাচার বন্ধ না হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গৌতম নিজে। তাঁর দাবি, ‘কোনও বাইরের লোককে কাজ দেওয়া হয়নি। মির্জাপুরের বাসিন্দারাই কাজ করছেন। আমি টাকা নিয়ে কাউকে চাকরি দিয়েছি, অভিযোগকারীরা তার প্রমাণ দিক। স্থানীয় দু’একজন যুবক এসব রটিয়ে আমার বদনাম করার চেষ্টা করছে।’