নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন বনগাঁর দাঁ বাড়ির পুজো। কথিত আছে, স্বপ্নাদেশ পেয়েই পুজোর প্রচলন করেছিলেন পূর্বপুরুষ। দাঁ পরিবার ছিল সওদাগর। জনশ্রুতি, স্বপ্নাদেশ পেয়ে বৈঁচিতে দেবী কমলেকামিনী দুর্গার পুজো শুরু করেছিলেন দাঁ পরিবারের সদস্যরা। তারপরে একসময় হয় বর্গী আক্রমণ।
সময়টা নবাব সিরাজদ্দৌলার। সেই সময় বর্গী আক্রমণ হয়। গভীর রাতে এলাকা ছেড়ে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসেন ২ ভাই। ধনপতির উত্তর পুরুষ এক ভাই চলে যান যশোহরে। আর অন্য ভাই থাকেন বনগাঁ’র গোপালনগরে। গোপালনগরে যিনি ছিলেন তাঁর নাম কৃষ্ণচন্দ্র দাঁ। তিনি এখানেই কমলেকামিনী পুজো শুরু করেন। তাঁর উত্তর পুরুষ অজিত কুমার দাঁ বনগাঁয় প্রচলন করেছিলেন এই পুজো।
জনশ্রুতি, ধনপতি একবার সওদা করতে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলেন। সমুদ্রের মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়লে তিনি দেখতে পান এক দেবীকে। এরপর তিনি রাজা শালিবানকে সেই গল্প বলেছিলেন। সব শুনে রাজাও দেখতে চেয়েছিলেন দেবীকে। তবে সওদাগর নিয়ে গেলেও রাজা দেখা পাননি দেবীর। তাতেই ক্ষুব্ধ রাজা বন্দি করেন সওদাগর ধনপতিকে। এই ধনপতির ছেলে ছিলেন শ্রীমন্ত। তিনি বড় হয়ে উঠলে বাবার খোঁজ করতে রাজার কাছে যান। সমুদ্রে পাড়ি দেওয়ার সময় তিনিও দেখতে পেয়েছিলেন দেবীকে। তবে রাজাকে দেবী দেখাতে পারেননি শ্রীমন্ত। ক্ষুব্ধ রাজা তাঁকে ঠেলে ফেলে দিয়েছিলেন সমুদ্রে। তবে সমুদ্র থেকে তাঁর প্রাণ রক্ষা করেছিলেন দেবী। তারপরে দাঁ পরিবার স্বপ্নাদেশ পায় দেবীর। সেই থেকেই প্রচলন হয়েছিল পুজোর। এই দেবী মঙ্গলচণ্ডী। তিনিই পূজিতা হন কমলেকামিনী রূপে। তাঁর একহাতে শ্রীমন্ত। অন্যহাতে পদ্ম।
জানা গিয়েছে, প্রতিমা নির্মাণ শুরু হয় জন্মাষ্টমীর দিন। রয়েছে কুমারী পুজোর প্রচলন।