নিজস্ব প্রতিনিধি: বিবাহিত মেয়ে বেসরকারি ঋণদানকারী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। স্বল্প সুদে গ্রাহকদের ঋণ দেওয়া কাজ। কিন্তু গ্রাহকদের ঋণের অর্থ না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন। এই অভিযোগে বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর ও অপমানের সঙ্গে যৌন হেনস্থাও করে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মীরা। অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেন ওই মেয়ের বাবা-মা ও ভাই। হাড় হিম করা এমন ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি থানার হাঁড়া নস্করপাড়া এলাকায়। মেয়ের উপর নির্যাতন ও যৌন হেনস্থা সঙ্গে আর্থিক তছরুপের বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে ফেসবুক লাইভে একে একে গলায় ফাঁস দিয়ে জঙ্গলের মধ্যেই আত্মহত্যা করেন পরিবারের তিন সদস্য।
অশোক এবং রীতা নস্কর, তাঁদের এক ছেলে ও একটিমাত্রই মেয়ে পুনম। যার বিয়ে হয়েছে কিন্তু ছিলেন বাপের বাড়িতে। রয়েছে একটি পুত্রসন্তানও। বেসরকারি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন পুনম। সেখানেই নাকি টাকা হাতিয়েছেন, এই অভিযোগ করেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মকর্তারা। সেই কারণেই গত শনিবার রাতে পুনমের বাপের বাড়িতে চড়াও হয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কর্মচারীরা। মারধর ও যৌন হেনস্থা করা হয় পুনমের উপর। মেয়েকে বাঁচাতে গেলে পুনমের মাকেও মারধর করে। প্রাণ ভয়ে বাড়ি ছেড়েই রাতে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানার বকখালির জঙ্গলে গা ঢাকা দেয়। পুনম জানিয়েছিলেন মিথ্যা অপবাদে ফাঁসানো হচ্ছে তাকে। সেই মর্মে রবিবার সকালে থানায় এফআইআর দায়ের করে পুনম। কিন্তু অপমান সহ্য করতে না পেরে ফেসবুক লাইভে এসে বকখালির জঙ্গলেই আত্মহত্যা করেন পুনমের বাবা-মা-ভাই।
খবর পেয়েই বকখালির জঙ্গলে তিনজনের দেহ উদ্ধার করে ফ্রেজারগঞ্জ উপকূল থানার পুলিশ। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় ওই বেসরকারি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ব্যাঙ্কের পাঁচ মহিলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে পুনম ও তাঁর স্বামীকেও। এলাকায় শোকের ছায়া।