নিজস্ব প্রতিনিধি: বৌদ্ধ ধর্মের প্রধান(The Chief of Buddhism) দলাই লামা(Dalai Lama) পা রেখেছেন শিলিগুড়িতে(Silliguri)। এদিন সকালেই তিনি সিকিম থেকে শিলিগুড়িতে এসে পৌঁছান। তাঁর এই ১ দিনের সফরের জেরে শিলিগুড়ি শহরে এদিন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে শহরকে। শালুগাড়া বাজার সংলগ্ন বিকাশনগরের এদিন এক স্টাডি সেন্টারে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন দলাই লামা। এদিন দুপুর পর্যন্ত তিনি সেখানেই থাকবেন। এরপর শহরের এক বিলাসবহুল হোটেলে রাত্রিবাস করে শুক্রবার বুদ্ধ গয়ায় যাবেন। অনুষ্ঠানের জায়গার নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে গতকাল রাত ১২টা থেকেই চেকপোস্ট থেকে আট মাইল পর্যন্ত যানবাহন চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সেবক রোড কিংবা চম্পাসারি থেকে ভারী গাড়িগুলোকে Eastern Bypass দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, পাহাড় থেকে আসা ভারী গাড়িগুলোতে করোনেশন সেতু দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
পূর্ণার্থীদের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য স্থানীয় ঘাট মোড় এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও ভক্তিনগর থেকে আসা পূর্ণার্থীদের জন্য স্থানীয় একটি স্কুলে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে বিকাশনগর বিএসএফ রোড দিয়ে কোনও পূর্ণার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ওখান দিয়ে শুধু ভিআইপি-রাই যাতায়াত করছেন। বাকিদের জন্য ওই রাস্তা বন্ধ রাখা হয়েছে। পূর্ণার্থীরা ঢুকছেন স্থানীয় এসবিআই মোড় দিয়ে। সেখানে ঢোকার পর একটা বড়ো মাঠে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে এলইডি-ও লাগানো হয়েছে। সেখান দিয়ে সবাই দলাই লামার কাছ থেকে জ্ঞানের কথা শুনছেন। এছাড়াও স্টাডি সেন্টারের পাশে ও উলটোদিকেও দুটো মাঠ রয়েছে। সেখানেও পূর্ণার্থীদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমস্ত এলাকাটাই কঠোর নিরাপত্তা নজরদারির মধ্যে রয়েছে। স্টাডি সেন্টারে যারা ঢুকছেন, তাঁদের প্রত্যেককে পরীক্ষা করে নেওয়া হচ্ছে। দুপুরে স্টাডি সেন্টারে খাওয়া শেষে রাতিযাপনের সময় প্রধাননগরের ওই হোটেলে দলাই লামা যাওয়ার সময়ই গোটা রাস্তাটিা পুলিশে মুড়ে দেওয়া হবে।
দলাই লামার এই শিলিগুড়ি সফরের মাঝেই সামনে এসেছে ভারতের পড়শি দেশ চিনের(China) নজর পড়েছে শিলিগুড়ির ওপরে। শিলিগুড়ির পূর্ব রয়েছে ভুটান, পশ্চিমে সিকিম, মাঝখানে চিনের চুম্বি উপত্যকা। এক্ষেত্রে ডোকালামের অবস্থানও তাৎপর্যপূর্ণ। তিন দেশের সংযোগস্থলে রয়েছে এই ডোকালাম। যেখানে ২০১৭ সালে চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়েছিল ভারত ও চিনের সেনা। তৈরি হয়েছিল যুদ্ধ পরিস্থিতি। ডোকালামেই সামরিক পরিকাঠামো তৈরিতে ভারতীয় সেনাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল লালফৌজ। ভারতীয় সেনা প্রতিবাদে জানাতে আগ্রাসনে যায়। এই জায়গার খুব কাছেই কিন্তু রয়েছে শিলিগুড়ি। উত্তরবঙ্গের(North Bengal) সবথেকে বড় শহর এই শিলিগুড়ি। উত্তর পূর্ব ভারত থেকে দেশের অন্য যে কোনও অংশের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে শিলিগুড়িই হল গেটওয়ে। সূত্রের খবর, ড্রাগনের নজর এখন সেখানেই। ভারতীয় সেনাও সেটা বেশ ভাল করেই জানে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরাও এই জায়গার ভৌগলিক গুরুত্বের কথাও বারেবারে বলেন। সূত্রের খবর, চিন এখন আবার ভারতের প্রতিবেশী ভুটানকেও গিলে ফেলার ছক কষেছে। ধারেভারে ছোট দেশ, গরিব দেশ ভুটান বিশেষ বাধাও দিতে পারছে না। সূত্রের খবর, ভুটানের জমি দখল করে আস্তে আস্তে শিলিগুড়ির দিকে এগিয়ে আসতে চাইছে বেজিং।