এই মুহূর্তে

WEB Ad Valentine 3

WEB Ad_Valentine

মমতার বাংলায় প্রশ্নের মুখে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কমছে কন্যাসন্তান

নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলায়(Bengal) মেয়েদের স্কুলছুট রুখতে ও বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) চালু করেন ‘কন্যাশ্রী’(Kanyasree) প্রকল্প। সেই প্রকল্প শুধু যে বাংলা জুড়েই জনপ্রিয়তা পেয়েছে তাই নয়, বিদেশের কুর্ণিশও আদায় করে নিয়েছে। বাংলার বুকে মেয়েদের স্কুলছুটের পরিমাণ কমেছে, পাল্লা দিয়ে কমেছে বাল্যবিবাহের সংখ্যাও। আবার গরীব ঘরের মেয়েদের বিয়ের জন্য আর্থিক সাহায্য করতে মুখ্যমন্ত্রী চালু করেন ‘রূপশ্রী’(Rupasree) প্রকল্পও। সেই প্রকল্পও আজ বাংলার ঘরে ঘরে বন্দিত। তবে এই দুই প্রকল্পকেই ছাড়িয়ে গিয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের(Lakhir Bhandar) জনপ্রিয়তা। কিন্তু এবার এই ৩ প্রকল্পই পড়ে গেল প্রশ্নের মুখে। কেননা সমীক্ষা বলছে বাংলায় কন্যাসন্তান(Daughter) জন্মানোর সংখ্যা কমছে। বিশেষ করে কলকাতা, দুই মেদিনীপুর এবং দুই বর্ধমানে উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে কন্যাসন্তানের জন্ম। যা কার্যত বলে দিচ্ছে কন্যাসন্তানকে নিয়ে আমজনতার অরুচি এখনও ঘোচেনি। মমতার প্রকল্প পারেনি মানুষের মানসিকতায় পরিবর্তন ঘটাতে।

আরও পড়ুন ঐক্যবদ্ধ ভারত, বার্তা তৃণমূল সুপ্রিমোর

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চালু করা শতাধিক প্রকল্প বাংলার আর্থসামাজিক ক্ষেত্রের ছবিটাই বদলে দিয়েছে। রাজ্যের আর্থিক চিত্রের উন্নয়ন ঘটার পাশাপাশি মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলিরও আর্থিক পরিস্থিতির যে উন্নত হয়েছে তা বার বার স্বীকার করেছেন দেশ-বিদেশের তাবড় তাবড় অর্থনীতিবিদরা। কিন্তু এখন নতুন প্রশ্ন, আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটালেও মানুষের মানসিকতা কী বদল ঘটাতে পেরেছে এই সব আর্থসামাজিক প্রকল্প? যদি বদল ঘটাতে পারে তাহলে আজও কেন বাংলার বুকে কন্যাসন্তান পরিত্যাজ্য? কেন এখনও রাজ্যের গ্রাম থেকে শহরে কেন এখনও ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারণ করার কাজ হয়ে চলেছে অবিরত। সব থেকে বড় কথা বিজ্ঞানকে হাতিয়ার করেই এই সব লিঙ্গ নির্ধারণের কাজ হয়ে চলেছে অবিরত। কোথাও ইউএসজি, এমআরআই-য়ের মাধ্যমে আবার কোথাও এনআইপিটি’র মাধ্যমে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট বলছে, যত সময় গড়াচ্ছে রাজ্যের জেলায় জেলায় হুড়মুড় করে কমছে কন্যাসন্তানের জন্মের সংখ্যা। শুধু কলকাতা, দুই মেদিনীপুর বা দুই বর্ধমানি নয়, কন্যা সন্তান জন্মের সংখ্যা কমছে নদিয়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, মালদা, উত্তর দিনাজপুর এবং কালিম্পং-এ্র মতো জেলাতেও।  

আরও পড়ুন কলকাতায় উদ্ধার ৫৯ লাখ টাকা, গ্রেফতার ৯

স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট বলছে রাজ্যে এখন প্রতি এক হাজার পুত্রসন্তান জন্মের তুলনায় কন্যাসন্তান জন্মের অনুপাত শুধু নিম্নমুখী নয়, কোথাও কোথাও তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক স্তরে গিয়ে পৌঁছেছে। ২০২০ সালের কেন্দ্রীয় সরকারের সিভিল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম বা সিআরএস অনুযায়ী, বাংলায় পুত্র ও কন্যা সন্তান জন্মের অনুপাতে উদ্বেগজনক অবস্থায় থাকা জেলাগুলি হল যথাক্রমে কলকাতা(৯৩৬), পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর(৯৩৯ ও ৯০৭), নদীয়া(৯৩৬), উত্তর দিনাজপুর (৯২২) ও কালিম্পং(৯২৬)। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নিজস্ব তথ্যভাণ্ডার এইচএমআইএস বা হেলথ ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বলছে ২০২১-২২ সালে কন্যাসন্তান জন্মে পিছিয়ে থাকা জেলাগুলি হল যথাক্রমে কলকাতা(৯৩৬), পশ্চিম মেদিনীপুর(৯৩৭), পশ্চিম বর্ধমান(৯১২), হুগলি(৯৩৪), পুরুলিয়া(৮৯৭), ঝাড়গ্রাম(৯২৪), মালদা(৯৩৩) এবং কোচবিহার(৯৩১)। এছাড়াও দেশের অন্যতম বড় সমীক্ষা ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে বা এনএফএইচএস-৫ অনুযায়ী কন্যাসন্তান জন্ম উদ্বেগজনক কম হচ্ছে কলকাতা(৮০৯), পূর্ব মেদিনীপুর(৭৭৭), পুরুলিয়া(৮৬০), পশ্চিম ও পূর্ব বর্ধমান(৮৭৭ ও ৭৮৭) এবং বীরভূমের(৯৩৪) বুকে।

আরও পড়ুন বৃহস্পতিবার রাত থেকে বঙ্গে জাকিয়ে পড়বে শীত

রাজ্যের চিকিৎসক মহলের একাংশের দাবি, এই ঘটনার মূলে রয়েছে কন্যাসন্তান নিয়ে আমজনতার নেতিবাচক মনোভাব। আবার অনেকে দায়ী করেছেন ভ্রুণ নির্ধারণের বেআইনি পদ্ধতিকে বন্ধ না করতে পারার ঘটনা। কিন্তু সমাজতত্ত্ববিদদের অভিমত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থসামাজিক প্রকল্পগুলি আর্থিক ছবির বদল ঘটাতে সক্ষম হলেও কন্যাসন্তানকে ঘিরে নেতিবাচক মনোভাবের বদল ঘটাতে পারেনি। এই ছবি শুধু বাংলার নয়, কার্যত গোটা দেশের ছবি। বাংলা এই ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে ব্যতিক্রম নয়। অতিবড় শিক্ষিতরাও পুত্রসন্তান চাইছেন, কন্যাসন্তান নয়। শুধু মমতার প্রকল্পই নয়, দেশের কোনও প্রকল্পই এই মানসিকতার বদল ঘটাতে পারবে না যতক্ষণ না মানুষ প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত হয়ে উঠবেন। তবে দেশের এবং রাজ্য সরকারগুলিকে অবিরত প্রচার চালিয়ে যেতে হবে এই মানসিকতার বদল ঘটানোর জন্য। না হলে কন্যাশ্রী, রূপশ্রী আর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মতো প্রকল্পগুলির উপকারিতা সম্পূর্ণতা পাবে না।

Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

স্ত্রী বিজেপিতে যোগদানের পরেই জগন্নাথ সরকারকে বেনজির আক্রমণ মুকুটমণির

বহরমপুরে রোড শো’ তে বেরিয়ে লস্যিতে চুমুক ইউসুফ পাঠানের

দেবাংশুর প্রচারে গিয়ে আক্রান্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যরা ,প্রতিবাদে নন্দীগ্রামে পথ অবরোধ

বেলঘরিয়ায় ভোট প্রচারে সুজন চক্রবর্তীর ‘সাদা চুল’ নিয়ে কটাক্ষ মদন মিত্রের

স্বামীকে ব্রাউন সুগার খেতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে বিষ খাইয়ে মারল শ্বশুরবাড়ির লোকজন

মঙ্গলবারের পর থেকে বঙ্গে দুর্যোগ কাটবে, বাড়বে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা

Advertisement
এক ঝলকে
Advertisement

জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর