নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের সবচেয়ে বড় কয়লাখনি দেউচা-পাঁচামি নিয়ে খুবই সচেতন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আগেই জানিয়েছেন এই কয়লাখনির জন্য সিঙ্গুরের মত জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। যাতে কেউ উস্কানি বা গণ্ডগোল পাকাতে না পারে তাই নিয়ে হয়েছে বিশেষ কমিটি। শুক্রবার দেউচা-পাঁচামি নিয়ে জমিদাতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে বীরভূম জেলা প্রশাসন। জমিদাতাদের হাতে সরকারের ঘোষিত প্যাকেজ তিনটি ভাষায় ছাপিয়ে এলাকার গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বোঝানো হয় জমিদাতাদের, চিন্তার কোনও কারণ নেই বলেও জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
শুক্রবারের বৈঠক নিয়ে জেলাশাসক বিধান রায় জানিয়েছেন, ‘এই প্যাকেজ নিয়ে এলাকায় চর্চা, আলোচনা, নানান প্রশ্ন উঠবে। আমরা সে নিয়ে এলাকায় গিয়ে পাড়া বৈঠক কিংবা দরকারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আলোচনা করতে রাজি। তবে প্রথম বৈঠকেই আমরা খুশি।’ শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারত তথা এশিয়ার সবচেয়ে বড় কয়লাখনি হিসেবে গড়ে উঠছে দেউচা-পাঁচামি। যা নিয়ে ধীরে চলো নীতিতে এগোচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকলের সঙ্গেই আলোচনা করেই দেউচা- পাঁচামিতে কাজ শুরু করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেটা রুপায়ণে বদ্ধপরিকর জেলাপ্রশাসনও। ইতিমধ্যেই সর্বস্তরেই ছাড়পত্র পেয়েছে এই কয়লাখনি। সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, দেওয়ানগঞ্জ ও হরিনসিঙা- এই দুই মৌজা থেকেই এশিয়ার বৃহত্তর কয়লাখনির খননের কাজ শুরু হবে। সে জন্য দেওয়ানগঞ্জের ১ নম্বর মৌজা থেকে সরকারি জমিতে ১৫ জায়গায় খনন শুরু হয়ে যাবে। এলাকায় মোট ৮০ টি জায়গায় গর্ত খুঁড়ে কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হবে।
জেলাশাসক জানিয়েছেন, ‘ওই এলাকায় তিন ধরনের জমি আছে। বনভূমি, ব্যক্তিগত জমি ও সরকারি খাস জমি। আমরা প্রথমে সরকারি জমি থেকে খননের কাজ শুরু করব। তারপরে যেখানে যেমন জমি প্রয়োজন হবে, সেখানে তেমন জমি নেওয়া হবে।’ আদিবাসীদের পুনর্বাসনের জায়গা হিসাবে চাদা ও প্যাটেলনগরের সরকারি এলাকাকে রেখেছে প্রশাসন। জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠি জানিয়েছেন, ‘ওই এলাকার পাশেই ঝাড়খণ্ড সীমানা। সেখান থেকে কেউ যাতে এসে ঝামেলা না করতে পারে, তার উপর নজরদারি করবে পুলিশ। পাশাপাশি পুলিশ,পিডিসিএল, সাধারণ প্রশাসনকে নিয়ে যৌথ একটি কমিটি গঠন করা হবে।’ বনভূমি কাটা হলেও তাঁর বিকল্প বনভূমি বানানো হচ্ছে আইনি জট এড়াতে। যা প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে তা গোটা ভারতের মধ্যে সেরা।