নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁকুড়া: আশঙ্কা ছিল পুজোর আগে থেকেই। পুজো মিটতে না মিটতেই প্রায় সর্বস্বান্ত বাঁকুড়ার সংগ্রামপুরের প্রায় শতাধিক কৃষক। হেক্টরের পর হেক্টর জমির ফসল প্রতিদিন এসে নষ্ট করে দিয়ে যাচ্ছে হাতির পাল। আগে ব্যবস্থা নিয়েও হাতির পালকে আটকে রাখতে পারেনি বনবিভাগ। আর এই অভিযোগেই মঙ্গলবার সংগ্রামপুরের বীট অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন কৃষকরা।
এমনীতেই কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জল জমে নষ্ট হয়েছে মাঠের ফসল৷ তার উপর বাঁকুড়ার সংগ্রামপুরের কৃষকদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে হাতির পালের তাণ্ডব৷ পুজোর মুখেই প্রায় ৮০টি হাতি বাঁকুড়াকে চারদিক দিয়ে ঘিরে ফেলেছিল। তা মাথায় রেখেই বনকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছিল। টোল ফ্রি নম্বর চালু করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও গ্রামবাসীর অভিযোগ, খাবারের খোঁজে প্রত্যেকদিন হাতির দল ঢুকে পড়ছে মাঠের ভেতর৷ ফসল খেয়ে জমির দফারফা করে চলে যাচ্ছে৷ আবার পরের দিন চলে যাচ্ছে অন্য গ্রামের জমির ফসল খেতে৷ হাতির পালের তাণ্ডবের রোজনামচায় বিরক্ত বড়জোড়া রেঞ্জের অন্তর্ভুক্ত গ্রামের কৃষক থেকে স্থানীয়রা৷ দাঁতালদের এলাকা থেকে সরানোর দাবিতে তাই মঙ্গলবার সকালে সংগ্রামপুরের বীট অফিসে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা৷ এই বিক্ষোভের পর নড়েচড়ে বসেন বনকর্মীরা৷ গ্রামবাসীদের আশ্বাস দেওয়া হয়, হাতিদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থা করা হবে৷ তারপরই বিক্ষোভ তুলে নেন গ্রামবাসীরা৷
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, খাবারের খোঁজে পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমানা পেরিয়ে প্রায় ৮৭টি হাতি বাঁকুড়ায় ঢুকে পড়েছে। বিষ্ণুপুর, জয়পুর, সোনামুখী হয়ে দারকেশ্বর নদ ডিঙিয়ে এখন সংগ্রামপুরে হাজির হয়েছে৷ গত ২০-২২ দিন ধরে এখানেই আছে হাতির পাল। প্রতিদিন চাষের ফসল নষ্ট করছে তারা৷ মঙ্গলবার সকালে হাতির হানায় প্রায় পাঁচশো হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে৷ এতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কৃষকরা৷ বন দফতরের এক কর্মীর কথায়, সমস্যা তৈরি হয়েছে অন্য জায়গায়৷ আসলে কয়েক বছর আগে হাতির হানা ঠেকাতে শীতলা বীট এলাকায় ইলেকট্রিক ফেন্সিং দেওয়া হয়েছিল৷ সেই ইলেকট্রিক ফেন্সিং পেরিয়ে হাতির দল আর এগোতে পারছে না৷ আবার বন দফতর এবং স্থানীয় মানুষের বাধায় হাতির দল পিছোতে পারছে না৷ তাই সংগ্রামপুরে ফসলের জমিতে হাতির দল রোজ রোজ হানা দিচ্ছে৷