নিজস্ব প্রতিনিধি: এক প্রসূতির অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে মূত্রথলি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার তদন্ত করে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একটি বেসরকারি নার্সিংহোমকে ৪ লাখ টাকা জরিমানা করল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। দক্ষিন দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট শহরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমকে এই জরিমানা করা হয়েছে।
বালুরঘাট শহরের ত্রিধারা পাড়া এলাকার ওই নার্সিংহোমের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জেলা শাসকের কাছে ও স্বাস্থ্য দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শহরের এ কে গোপালন কলোনির বাসিন্দা রনজিৎ দাস। তাঁর অভিযোগ, ওই ব্যক্তির স্ত্রী প্রসব বেদনা নিয়ে বালুরঘাট শহরের এক নার্সিংহোমে ভর্তি হলে সেখানে তাঁকে অস্ত্রোপচার করার পরামর্শ দেন এক মহিলা চিকিৎসক। ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার করার পরে হঠাৎ ওই মহিলা অসুস্থ হয়ে যায় বলে অভিযোগ। এর পর মালদায় রেফার করা হয়। সেখানে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসক জানিয়ে দেন মহিলার অস্ত্রোপচার করার সময় মূত্রথলি কাটা পড়েছে। এর পর রোগীকে বাঁচাতে বাড়ি বন্ধক রেখে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। পাশাপাশি জেলা শাসকের দফতরে সব জানিয়ে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি রোগীর চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন করেন রনজিৎ দাস। এর পর জেলা প্রশাসন এই নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্তে চিকিৎসার গাফিলতিতে প্রসূতির মূত্রথলি কেটে বাদ দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ হতেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ৪ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়।
এই ঘটনা নিয়ে দক্ষিন দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েষা রানী শুক্রবার জানান, ওই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ তিনি পেয়েছিলেন এবং ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী ঘটনার সত্যতা যাচাই করার পর ওই নার্সিংহোমকে সতর্ক করার পাশাপাশি তাদের ৪ লাখ টাকা জরিমানা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানার কথা ওই নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়াও হয়েছে বলে জানান জেলা শাসক। যদিও কয়েক বছর আগে এই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে এর আগেও একটি মামলায় ক্রেতা সুরক্ষা দফতর জরিমানা ধার্য করেছিল। নার্সিংহোম চালানোর জরুরি শর্ত না মানায় নার্সিংহোমটিকে বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল স্বাস্থ দফতরের তরফে। পরে তা খুললেও পরিষেবায় হাল ফেরেনি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। যদিও সম্প্রতি ৪ লাখ টাকা জরিমানার বিষয়ে মুখ খোলেনি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ।