নিজস্ব প্রতিনিধি: শিক্ষক পদে চাকরি দেওয়ার নামে ৪ লাখ টাকা প্রতারণা করার অভিযোগ উঠল শাসকদলের এক নেতা ও এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। চাকরি দেওয়ার নাম করে এক গৃহবধূর কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার কোতোয়ালি থানা এলাকায়। ইতিমধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জলপাইগুড়ি ৪ নম্বর ঘুমটি সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা পেশায় গৃহশিক্ষক এক গৃহবধূ ২০১২ এবং ২০১৬ সালে টেট পরীক্ষায় পাশ করেন। কিন্তু তাঁর চাকরি হচ্ছিল না। অবশেষে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন তৃণমূলের জেলা কমিটির প্রাক্তন সদস্য সঞ্জীব ঘোষের সঙ্গে। সঞ্জীব ঘোষ ওই বধূর আত্মীয়। অভিযোগ, সেই সময় সঞ্জীব ঘোষ ওই গৃহবধূকে জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা সোমনাথ বসু নামে এক শিক্ষকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। ওই শিক্ষকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তিনি ওই বধূকে বলেন, ‘সোমনাথকে টাকা দিলে সে চাকরি পাইয়ে দেবে’। অভিযোগকারীর দাবি, এরপর গত বছর জানুয়ারি মাসের ৬ তারিখে আলোচনায় বসলে ঠিক হয়, আপার প্রাইমারির শিক্ষক পদে বধূকে চাকরি দেওয়া হবে। সেজন্য মোট ১২ লাখ টাকা সোমনাথ বসুকে দিতে হবে। এই পুরো টাকাটা তিন দফায় দিতে হবে। অর্থাৎ ৪ লাখ টাকা করে তিন বার দিতে হবে। এরপর প্রথম দফায় ৪ লাখ টাকা দিলেও চাকরির বিষয়ে কোনও খবর মেলেনি। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে ওই গৃহবধূ ও তার স্বামী টাকা ফেরত চান। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য অভিযুক্তকে চাপ দিতে থাকেন। এরপর সোমনাথ বসু তাদের ৪ লাখ টাকার একটি চেক দেন। কিন্তু ব্যঙ্কে সেই চেক জমা দিলে জানানো হয়, ওই অ্যাকাউন্ট ব্লক করে রাখা আছে। এদিকে দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও টাকা না মেলায় অবশেষে অভিযোগকারিণী এবং তাঁর স্বামী গত ২০ জুন তারিখে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় তাঁরা গত ৪ জুলাই জলপাইগুড়ি সিজেএম আদালতের দারস্থ হন। আদালত এই ঘটনায় পুলিশকে তদন্ত করার নির্দেশ দেয় বলে জানান অভিযোগকারী।
এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন, ‘কোতোয়ালি থানায় ইতিমধ্যে মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।’ অন্যদিকে অভিযুক্ত তৃনমুল নেতা সঞ্জীব ঘোষ জানিয়েছেন, ‘আমি এই ঘটনার সাথে আমি কোনও ভাবে জড়িত নই৷ আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে কোনো তথ্য প্রমাণ থাকলে এরা দেখাক। যারা এইভাবে আমাকে ফাঁসাতে পারে তারা আর যাই হোক আমার আত্মীয় নয়। আমি সব রকম তদন্তের সম্মুখীন হতে প্রস্তুত।’ এদিকে অপর অভিযুক্ত সোমনাথ বসু পলাতক বলে স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে জানিয়েছেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। ‘এই বিষয়ে রাজনীতির কোনও রঙ নেই। আইন আইনের পথে চলবে’ বলে জানান তিনি।