নিজস্ব প্রতিনিধি,হাবরা: সে প্রায় ১০০ বছরের আগের কথা। একটা সময় এলাকায় ভয়ংকর ভাবে কলেরা দেখা যায়। তাতে অনেকে মারা যায়। একপ্রকার এলাকায় মহামারীর আকার ধারণ করে। গা উজাড় হয়ে যাচ্ছে দেখে অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। এমন সময় এক মুসলমান রমনীর স্বপ্নাদেশ হয়। স্থানীয় একটি পুকুর(Pond) থেকে জল নিয়ে সেই জল দিয়ে নিরামিষ রান্না করে খেলে তবেই এই রোগ থেকে মুক্তি মিলবে। শোনা যায় স্বপ্নাদেশের কথা শুনে তখন গ্রামে থেকে যাওয়া পরিবারগুলি এভাবেই রান্না করে খাওয়া-দাওয়ার পর রোগ মুক্তি পেয়েছিলেন। পুকুর পাড়ের কাছেই থাকা মন্ডল বাড়ির শিব মন্দিরে এলাকার বাসিন্দারা সেই সময় থেকে পুজো শুরু করেন।
অবশ্য সেই মন্দির এখন এলাকায় বারোয়ারী শিব মন্দির হিসেবেই পরিচিত। শতাব্দী প্রাচীন এই রান্না পূজা ও উৎসবে সামিল হয় হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ। বছরের পর বছর একইভাবে এই রান্না পুজো(Ranna Pujo) উৎসব হয়ে আসছে উত্তর চব্বিশ পরগনার হাবরার(Habra) ফুলতলা মন্ডলপাড়া এলাকায়। প্রতিবছর অঘ্রাণ মাসের অমাবস্যার পর প্রথম সোমবার এই পুজো হয়ে থাকে। দিনদিন পুজোর জাকজমক বেড়েই চলেছে এখন আর তা পাড়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ শামিল হয় এই রান্না পূজায়। পুজো উপলক্ষে এলাকায় বসে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আসর।
পুজো শুরুর কয়েকদিন আগে থেকে অবশ্য তার প্রস্তুতিও শুরু করেন তারা। পুকুরপাড়ের চারিদিক ঘিরে ও রাস্তার পাশে কয়েকশো উনোন তৈরি করে নিজেরাই রান্না করেন এবং সবাই একসঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া করেন ,একই সঙ্গে চলে মন্দিরে পূজাপাঠ। কথায় আছে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। তবে এই এলাকার মানুষ বিশ্বাস করেন এই মন্দির ও পুকুরের জলে স্নান করে অনেকেই তাদের মনস্কামনা পূরণ করেন। সেই বিশ্বাস থেকে আজও একই ভাবে হয়ে আসছে এই রান্না পুজো।