সুব্রত রায়, কৃষ্ণনগর
ফের এক বছরের অপেক্ষা। বুধবার সকাল থেকেই মন খারাপ ছিল কৃষ্ণনগরবাসীর। কেননা, বাপের বাড়ি ছেড়ে পতিগৃহে ফিরে যাচ্ছেন জগদ্ধাত্রী। বাড়ির মেয়েকে বিদায় জানাতে কারও মন চাইছিল না। কিন্তু কীই করা যাবে? বিদায় তো দিতেই হবে। আর সেই বিদায় যাত্রায় জনপ্লাবনে ভেসে গেল কৃষ্ণনগর শহর। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলল ঘট বিসর্জনের পালা। আর সন্ধে থেকে শুরু হয়েছে প্রতিমা নিরঞ্জনের পালা। আর ওই বর্ণময় বিসর্জন দেখার জন্য শুধু কৃষ্ণনগরই নয়, আশেপাশের এলাকা থেকেই ভিড় করেছেন দর্শনার্থীরা। আর সেই ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পুলিশকে। ঘট বিসর্জন পর্ব শান্তিতে মিটে যাওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন জেলা পুলিশের কর্তারা।
জগদ্ধাত্রী পুজোর সঙ্গে যেমন জড়িয়ে চন্দননগরের নাম, তেমনই কৃষ্ণনগরের নাম। চলতি বছর রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের নামাঙ্কিত শহরে পুজো দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ। ঝবুধবার সকাল থেকই শুরু হয়েছিল ঘট বিসর্জন। বেলা গড়াবার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে ভিড়। বাড়ির পুজো থেকে বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলি ঘট বিসর্জনেও বিশেষ শোভাযাত্রার আয়োজন করেছিল। আর সেই শোভাযাত্রা তাক লাগিয়ে দিয়েছে সব্বাইকে। কৃষ্ণনগরের আর এন টেগোর রোড, পোস্ট অফিস মোড় জনারণ্যে পরিণত হয়। প্রশাসনের নির্দেশ মতো শোভাযাত্রাগুলি শহরের নির্দিষ্ট পথ ধরে প্রদক্ষিণ করার পর জলঙ্গী নদীর দিকে অগ্রসর হয়।
ঘট বিসর্জন ও ভাসানকে কেন্দ্র করে কার্যত নিরাপত্তার মোড়কে কৃষ্ণনগরকে মুড়ে ফেলেছে পুলিশ। নিরাপত্তার কারণে শহরের বুকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়াও সম্পূর্ণভাবে আটকে দেওয়া একাধিক রাস্তাকে। নাগরিক নিরাপত্তার কথা ভেবে বাড়তি বাহিনী যেমন মোতায়েন করা হয়েছে, তেমনই নজরদারির জন্য থাকছে সিসি ক্যামেরা এবং ড্রোন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিমা নিরঞ্জন করা হবে কদমতলা ঘাটে। প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য বারোয়ারি পুজো কমিটিগুলিকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বুড়ি মা-সহ বিশেষ কিছু প্রতিমার জন্য প্রথম বার পরীক্ষামূলক ভাবে ‘গ্রিন করিডর’-এর ব্যবস্থা করছে পুলিশ।