নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলা ভাষাকে(Bengali Language) ধ্রপদী ভাষার(Classical Language) স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে তিনি আগেও সরব হয়েছেন, এদিনও হলেন। বৃহস্পতিবার বিকালে নবান্নতে সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানিয়ে দিলেন, বাংলা ভাষাকে ধ্রপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে তিনি কেন্দ্রকে ফের নতুন করে চিঠি পাঠিয়েছেন। তাতে নিজের ও বাংলার প্রায় ১০ কোটি মানুষের মাতৃভাষার হয়ে সাওয়াল করেছেন তিনি। যুক্তি তুলে ধরেছেন ছত্রে ছত্রে যে, দেশের অনান্য রাজ্যের ভাষা এই স্বীকৃতি পেলে বাংলা কেন তা পাবে না? তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি সুর চড়িয়েই দাবি করেন, কেন্দ্রের(Central Government) কাছে রাজ্য বহুদিন ধরেই বঞ্চিত। ভাষা নিয়েও বাংলাকে(Bengal) বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। আর সেই সূত্রেই তিনি কেন্দ্রকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, ‘অন্য রাজ্যের ভাষা যদি ক্লাসিকাল ভাষার স্বীকৃতি পায়, তাহলে আমাদের ভাষা কেন পাবে না? অন্য রাজ্যের ভাষা স্বীকৃতি পেলে কেন বাংলা পাবে না?’
এদিন মমতা বলেন, ‘বাংলা ভাষার জন্ম ও বিবর্তন হয়েছে আড়াই হাজার বছর ধরে। কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিভিন্ন মাপকাঠি মেপে কোনও কোনও ভাষাকে ধ্রুপদী ক্লাসিকাল ভাষার স্বীকৃতি দেয়। এখনও পর্যন্ত স্বীকৃতি ধ্রুপদী ক্লাসিকাল ভাষা- তামিল (২০০০), সংস্কৃত (২০০৫), তেলুগু ও কন্নড় (২০০৮), মালায়লাম (২০১৩) এবং ওড়িয়া (২০১৪)। আমি আজ একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়েছি। আমরা গবেষণামূলক তথ্য জোগাড় করে দেখেছি। ইতিহাস, প্রাচীন লিপি ও ভাষার বিবর্তন নিয়ে এই গবেষণা দেখাচ্ছে বাংলা ভাষার জন্ম ও বিবর্তন হয়েছে গত আড়াই হাজার বছর ধরে। এই ধ্রুপদী প্রাচীনতা এবার সরকারের স্বীকৃতির যোগ্য। আমরা অনেক পণ্ডিত ও অফিসারদের নিয়ে চার খণ্ডে প্রামাণ্য গবেষণাপত্র তৈরি করেছি। সেটায় দেখা যাচ্ছে, বাংলা অনেক আগেই ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে জাতীয় স্বীকৃতি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা বঞ্চিত করা হয়েছে। এবার তাই বাংলাকেও কেন্দ্র ধ্রুপদী ভাষা হিসেবে মেনে নিক।’
এদিন মমতা বিঁধেছেন বাংলার বুকে ৩৪ বছরের রাজত্ব করে যাওয়া বাম শাসকদেরও। তাঁর দাবি, ‘আমাদের সবরকম পাওয়ার যোগ্যতা ছিল। কিন্তু অপদার্থতা আমাদেরই। কারণ, আগে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কখনও এটা নিয়ে ভাবেননি, চর্চাও করেননি। তাঁদের রাজনীতি নিয়ে যতটা মন ছিল, এসব করা নিয়ে কোনও মন ছিল না। এটা হয়ে গেলে, এটি একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স তৈরি হবে। বাংলা পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ ভাষার মধ্যে একটি। আমরা গবেষণার মাধ্যমে বাংলার প্রাচীনতা ও ধ্রুপদী মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করলাম।’ তবে মমতা এদিন ইংরেজির প্রসঙ্গ টানেননি। টানলেও সেখানেও খোঁচা খেতে হত বামেদের। কেননা তাঁরা স্কুল থেকে ইংরেজি তুলে দিয়ে বাংলার কয়েক প্রজন্মের চূড়ান্ত ক্ষতিসাধন করে গিয়েছেন।