28ºc, Haze
Friday, 24th March, 2023 8:35 pm
নিজস্ব প্রতিনিধি: যোগীরাজ্যে বাংলার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেন আসানসোল পুরনিগমের(AMC) প্রাক্তন মেয়র(Former Mayor) তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেশ্বর(Pandabeshwar) বিধানসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক(Former MLA) জিতেন্দ্র তিওয়ারি(Jitendra Tiwari)। কম্বলবিলির ঘটনায় আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, দিল্লির কাছে উত্তরপ্রদেশের(Uttar Pradesh) নয়ডায়(Noida) যমুনা এক্সপ্রেসওয়ের(Yamuna Expressway) ওপরে জিতেন্দ্রকে এদিন গ্রেফতার করে বাংলার পুলিশ। এদিনই রাতের বিমানে তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। আগামিকাল সকালে তাঁকে আসানসোল মহকুমা আদালতে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন Kolkata Police’র ১৭০ জন ASI হলেন Sub Inspector
গত বছরের শেষদিকে আসানসোল পুরনিগমের ২৭ ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণডাঙা এলাকায় একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই অনুষ্ঠানেই কম্বল বিতরণ করা হচ্ছিল। শুভেন্দু নিজে মঞ্চ থেকে ৩-৪টি কম্বল বিলি করে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে চলে যান। মঞ্চে তখনও জেলা বিজেপির শীর্ষ নেতারা ছিলেন। মঞ্চের সামনে সেই সময় কম্বল নেওয়ার জন্য কমপক্ষে ৮ হাজার মানুষের জমায়েত ছিল। কম্বল নেওয়ার জন্য রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায় সেই সময়। আর ওই ভিড় সামলাবার মতো কোনও ব্যবস্থাই সেখানে ছিল না। পরিস্থিতি একসময় এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে আর কম্বল পাওয়া যাবে না মনে করে পিছনের লোকেরা দ্রুত সামনে আসতে গেলে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেই সময়েই পদপিষ্টের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হন। তাঁদের পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে, চিকিৎসকেরা ৩জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। মৃতদের মধ্যে একজন আবার তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী।
আরও পড়ুন Group-C শিক্ষাকর্মীর শূন্যপদে ১০০জনের Counciling ২৩ মার্চ
ঘটনাচক্রে যে ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটেছিল সেই ওয়ার্ডেই বিজেপির কাউন্সিলর ছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারির স্ত্রী চৈতালী তিওয়ারি। পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে নেমে জিতেন্দ্র ও চৈতালী দুইজনকেই দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। ওই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে, জিতেনের স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি-সহ মোট ৩ কাউন্সিলরের নামেও সেই মামলার জেরে চৈতালিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে জিতেনের ফ্ল্যাটে যান দুর্গাপুর-আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকেরা। কিন্তু ফ্ল্যাট তালাবন্ধ দেখে তাঁরা কয়েক বার নোটিস দিয়ে আসেন। তবে তিওয়ারি দম্পতির দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না বলে অভিযোগ। এই আবহে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর চৈতালির আবেদন মেনে তাঁকে অন্তর্বর্তিকালীন রক্ষাকবচ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি, তাঁকে তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশও দেন।
আরও পড়ুন বাংলার পরিযায়ী আদিবাসী শ্রমিকের কিডনি চুরি ভিন রাজ্যে
কিন্তু ১০ ফেব্রুয়ারি পাল্টা একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা চৈতালির বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এর পরই হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন জিতেন্দ্র এবং চৈতালি। কিন্তু বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁদের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। সেই একই আবেদন নিয়ে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন জিতেন। শুক্রবার তাঁর আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। তার মাঝেই গ্রেফতার হলেন আসানসোলের ওই বিজেপি নেতা। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা দফতর এবং আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ যৌথ ভাবে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করেছে।